Friday 06 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আশাবাদী আওয়ামী লীগ, মন ভেঙেছে বিএনপির


৩০ জুলাই ২০১৮ ১২:২৩ | আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ১৬:০২
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লাইনে ভোটাররা

।। সারাবাংলা ডেস্ক।।

ঢাকা : নগরপিতা নির্বাচনের জন্য বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট এই তিন সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ চলছে। সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত তিনি সিটির ভোট কেন্দ্রগুলোয় বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

এবারের ভোটে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে বরিশালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, রাজশাহীতে খায়রুজ্জামান লিটন, সিলেটে বদরউদ্দিন কামরান। বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বরিশালে মুজিবুর রহমান সরোয়ার, রাজশাহীতে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

ভোটকেন্দ্রের পরিবেশে খুশি আওয়ামী লীগ। তিন সিটিতে ক্ষমতাসীন প্রার্থীদের দাবি, তারা জয়লাভ করবেন। অপরদিকে মনক্ষুণ্ন বিএনপির মেয়রপ্রার্থীরা। বিএনপির প্রার্থীদের কাছ থেকে একতরফা অভিযোগ উঠেছে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট, নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকির অভিযোগ তুলেছেন তারা।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বেশ কয়েকজন মেয়র প্রার্থী এরইমধ্যে আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’

এর আগে নির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার অভিযোগ করেন যে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে, কেন্দ্র পাহারা দিচ্ছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সদস্যরা।

বিএনপির মেয়রপ্রার্থী বলেন, ‘বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার ৫০ জন পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। যেখানে পুলিশের আমার এজেন্টদের সুরক্ষা দেওয়ার কথা সেখানেই তারাই বের করে দিচ্ছে। এছাড়া ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কেন্দ্র পাহারা দিচ্ছে। সেখানে বিএনপির নেতা কর্মীদের, এমনকি ভোটারদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে আবার ছাত্রলীগ বা যুবলীগকে  পুলিশ বাধা দিচ্ছে না।’

বরিশালে সিটি নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ৩০টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১০টি। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৩টি, ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৫০টি।

নির্বাচনে মেয়র পদে সাত জন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৫ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এই সিটিতে রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন মুজিবুর রহমান।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন— সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (নৌকা), মজিবর রহমান সরওয়ার (ধানের শীষ), ডা. মনীষা চক্রবর্তী (মই), মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব (হাতপাখা), অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ (কাস্তে) ও ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল)।

খায়রুজ্জামান লিটন

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ না হলেও শতভাগের কাছকাছি নিশ্চিত নৌকার প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সোমবার সকাল ৮টার দিকে উপ-শহর স্যাটেলাইট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর তিনি এ কথা জানান।

আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে, যেকোনো ফলাফল আমি মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগের কাছকাছি নিশ্চিত। ভোটারদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে এ কয়দিনে এটা বুঝতে পেরেছি। রাজশাহীবাসী পরির্বতন চায়।’

কেমন ফলাফল আশা করছেন এমন প্রশ্নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বলেন, ‘বিজয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী আমি বলব না, তবে শতভাগের কাছাকাছি আমি বলব। কারণ মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ দেখছি তাতে আমি মনে করি আমরাই জিতব। আমি আজকে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার বা তার চেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে আমরা জিতবো বলে আশা করছি। কারণ আমি মানুষের মাঝে সেই উচ্ছ্বাস দেখেছি, সেই প্রত্যয় বা সংকল্প দেখেছি। তারা পরিবর্তন চান।’

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে (পুরুষ ও মহিলা) ধানের শিষের ১৫ জন পোলিং এজেন্টের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিল সিমলা এলাকায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কেন্দ্রে (পুরুষ) মেয়র পদে নৌকা প্রতীক ও কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থী ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

খবর পেয়ে সকাল ৮টার দিকে সেখানে আসেন ধানের শিষের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তোফাজ্জল হোসেন। সকাল সোয়া ৯টার দিকে তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সকল এজেন্টরা কেন্দ্রে পৌঁছেছেন। কিন্তু তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে অপেক্ষা করছি ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে মিনতি করছি—আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হোক। তিনি তাঁদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।

দুই মেয়র প্রার্থী ধানের শীষের মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং নৌকার প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন একই কেন্দ্রে ভোট দেন। এসময় তাদের সঙ্গে তাদের স্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। সোমবার ৩০ জুলাই সকাল ৮টার দিকে উপ-শহর স্যাটেলাইট স্কুল কেন্দ্রেই ভোট দেন তারা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ৩০টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১০টি। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৮টি, ভোট কক্ষের সংখ্যা ১ হাজার ২৬টি।

নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৬০ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজশাহী সিটিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ আমিরুল ইসলাম।

পাঁচ মেয়র প্রার্থী হলেন— এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল (ধানের শীষ), মো. হাবিবুর রহমান (কাঁঠাল), মো. শফিকুল ইসলাম (হাতপাখা) ও অ্যাডভোকেট মুরাদ মুর্শেদ (হাতী)।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দীন আহমেদ কামরান। সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।

ভোট দান শেষে নৌকার প্রার্থী কামরান জানান, ‘নগরীর কেন্দ্রগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট চলছে। নৌকার পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।’

কেন্দ্র দখল বা ভোটের পরিবেশ নিয়ে বিনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে কামরান বলেন, ‘জণগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসছে। ইনশাল্লাহ আমি জয়ী হবে।’

প্রয়োজনে মৃত্যুকে বরণ করে নেবেন তবু নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে কাউকে জায়গা করে দেবেন না বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।

সোমবার (৩০ জুলাই) সকালে রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাংবাদিকদের এক প্রতিক্রিয়ায় আরিফুল হক একথা বলেন। এর আগে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে এই কেন্দ্রে নিজের ভোট দেন তিনি।

এসময় বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী অভিযোগ করেন যে, নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এমসি কলেজ কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে রোববার (২৯ জুলাই) রাতেই নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয়েছে।

শত প্রতিকূলতার মধ্যে যদি জনগণ ভোট দিতে পারে তাহলে তিনি বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই সিলেটের ভোটের মাঠ অস্থিতিশীল হতে দেবো না।’

সিলেটের মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসছেন উল্লেখ করে এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘তারা যেন নিজের ভোট নিজে দিতে পারে সেটি প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।’

সিলেট সিটি নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ২৭টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৯টি। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। মহিলা ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৪টি, ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯২৬টি।

নির্বাচনে মেয়র পদে সাত জন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১২৭ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬২ জন নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিটানিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পাালন করছেন মো. আলিমুজ্জামন।

মেয়রপ্রার্থীরা হলেন— বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান (নৌকা), মো. আরিফুল হক (ধানের শীষ), বদরুজ্জামান সেলিম (বাস), এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (টেবিল ঘড়ি), আবু জাফর (মই), এহসানুল হক তাহের (হরিণ) ও ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন (হাতপাখা)।

সারাবাংলা/একে

আরও

বরিশাল শান্ত, ভয় তবুও পুলিশে
সিলেটে নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণে বিলম্ব, ক্ষোভ বিএনপির
মর্যাদার লড়াই লিটনের, হারানোর কিছু নেই বুলবুলের
পূণ্যভূমিতে উড়বে নৌকার বিজয় পতাকা: কামরান
তিন সিটিতে ভোট চলছে
মাঠে দেখা যাচ্ছে না বিএনপি নেতাকর্মীদের
নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রচার চলছে
নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে, জয় নিয়ে আশাবাদী কামরান
এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ মজিবুর রহমানের
জয়ের ব্যাপারে শতভাগের কাছাকাছি নিশ্চিত

আওয়ামী লীগ তিন সিটি বরিশাল বিএনপি মেয়র নির্বাচন রাজশাহী সিলেট

বিজ্ঞাপন

আজ পবিত্র ঈদুল আজহা
৭ জুন ২০২৫ ০০:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর