Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিক্ষক-পরিচালকদের দ্বন্দ্বে ক্লাস বন্ধ সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটে


৩০ জুলাই ২০১৮ ১৭:২২

।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাবি: পরিচালক ও শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে তিন সপ্তাহধরে ক্লাস বর্জন রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ইনস্টিটিউটের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় জন্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও শিক্ষকরা পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

একধিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জুলাই রোববার থেকে অন্তত বারো জন শিক্ষক ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমানের বিরুদ্ধে কিছু অনিয়মের অভিযোগ এনে কর্মবিরতিতে পালন করছেন। তাদের কর্মবিরতি এখনও অব্যাহত রয়েছে।

শিক্ষকরা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের একাধিক অনিয়মের কথা উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে গত ১৫ জুলাই লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে ওই শিক্ষকগণ গত ১২ মে পরিচালকের নিজের বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ এনে তদন্ত কমিটি গঠন করে সমস্যার সমাধান করার জন্য বলেন। তবে পরিচালক তাদের অভিযোগ আমলে না নেওয়ায় ৮ জুলাই থেকে তারা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি শুরু করেন।

অভিযোগপত্রে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন বিভাগের শিক্ষক ও বর্তমান উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা ও অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানীসহ অনেকে।

পরিচালকের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের ১১টি অভিযোগের উল্লেখযোগ্যগুলো হলো- যথাসময়ে একাডেমিক ও সিঅ্যান্ডডি কমিটির সভা না করা, সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, সান্ধ্যকালীন কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনিয়ম, শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজে অনিয়ম, পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টি করে বিদেশ গমন করা ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

পরিচালকের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ হলো, তিনি বিভাগের অধ্যাপক ও বর্তমান উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হেয় করার চেষ্টা করেছেন। অধ্যাপক সামাদের হত্যার হুমকি থাকা সত্ত্বেও গণভবন থেকে দেওয়া সিসি ক্যামেরা স্থাপনে বাধা দেয়। পরে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান তাদের অভিযোগগুলোর জবাবও দেন।

এদিকে, ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমানও ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর গত ২৬ জুলাই একটি অভিযোগ করেন। এর আগে উপাচার্যকে তিনি ইনস্টিটিউটের ঘটমান বিষয়গুলো নিয়ে একটি অবহিতকরণপত্র দেন বলে দাবি করেন। যদিও কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের দাবি সেটা তাদের বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ ছিল।

পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমানের অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো জোরপূর্বক ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া, শ্রেণিকক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া, কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষকগণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিস করতে বাধা দেওয়া, যেসব শিক্ষার্থী ক্লাস করতে চায় তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখানো ইত্যাদি।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুলাই ইনস্টিটিউটের সকল শিক্ষকদের নিয়ে উপচার্য একটি সভা করেন। সেখানে তিনি একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার জন্য বলেন। একই দিন দুপুরে একাডেমিক কমিটির একটি সভা বসে। সেখানে শিক্ষকরা তাদের বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে পরিচালক যে অভিযোগ দিয়েছেন সেগুলো ভিত্তিহীন দাবি করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এই দাবিতে কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা ১৫জুলাই পরিচালককে একটি চিঠিও দেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে আন্দোলনরত একজন শিক্ষক বলেন, একাডেমিক কমিটির সভায় শিক্ষকরা বসেছিল। কিন্তু ইনস্টিটিউটের পরিচালক উপাচার্যকে শিক্ষকদের নিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়েছেন। এজন্য তারা অভিযোগ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত পরিচালকের সঙ্গে বসবেন না এবং তাদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান বলেন, তারা অভিযোগ দিতেই পারে। কিন্তু ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার তো কোনো অর্থ হয় না।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস না হওয়ায় ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সেশনজটের শঙ্কা করছেন। অনেকে বাড়ি চলে গেছেন। ফয়সল নামের একজন ছাত্র সারাবাংলাকে বলেন, শিক্ষকদের আন্তঃকোন্দলের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরা ব্যক্তিস্বার্থ থেকে সরে এসে ছাত্রদের কল্যাণের কথা ভেবে দ্রুত ক্লাসে ফিরবেন বলে তিনি আশা করেন।

পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি

এদিকে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সিন্ডিকেট সদস্য ও আর্থ অ্যান্ড এনভারনমেন্টাল সাইয়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক হাসানুজ্জামান,অধ্যাপক রহমত উল্লাহ।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ক্লাস যাতে বন্ধ না হয় সেটা দেখা হবে।

সারাবাংলা/কেকে/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর