মুসা বিন শমসেরের দখলে থাকা মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি উদ্ধার
৩১ জুলাই ২০১৮ ২০:০৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে ১৯৯৬ সালে মাত্র তিন বছরের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়ে ২২ বছর ধরে ভোগ-দখল করে আসছিলেন মুসা বিন শমসের। আদালতের নির্দেশে সেটা দখলমুক্ত করা হয়েছে।
রাজধানীর বনানী থানার ১-নম্বর রোডের আই ব্লকে বাড়িটির অবস্থান। বাড়ি নাম্বার ৫৭।
মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বনানী থানা পুলিশের সহায়তায় ঢাকা জেলা প্রশাসন বাড়িটি উদ্ধার করে ওই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়।
বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বি এম ফরমান আলী সারাবাংলাকে বলেন, আদালতের রায়ের ভিত্তিতে বাড়িটির দখলদারিত্ব মূল মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রায় থেকে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রী মরহুম অধ্যাপক ইউসুফ আলী (সাবেক ডিআইটি রোড) ১-নম্বর রোডের ৫৭ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ পাওয়ার পর সেখানে একটি দুইতলা ভবন নির্মাণ করেন।
ওই বাড়িটি পরবর্তীকালে মুসা বিন শমসের মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নেন। ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ ছিল ১৯৯৬ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১৯৯৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ভাড়া চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তীকালে আর নবায়ন করা হয়নি। এমনকি নিয়মিত ভাড়াও প্রদান করেননি।
১৯৯৮ সালের ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী মারা গেলে তার পরিবারের সদস্যরা মুসা বিন শমসেরকে নোটিশ দেন বাড়িটি খালি করে দিতে। তবে মুসা ও তার লোকেরা বাড়িটি খালি করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এমনকি উল্টো ভয়ভীতিও দেখায়। এ ছাড়া বাড়িটি মরহুম মুক্তিযোদ্ধার কাছে থেকে কিনে নিয়েছে বলেও দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
২০০২ সালের ২৫মে ঢাকা জজ আদালতে বাড়ি উদ্ধারে মামলা করেন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আইয়ুব আলী। মামলাটি হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। এরপর ১৬ বছর পর রায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষে যায়। এরপর বাড়িটি দখলে নিতে আদালত নোটিশ জারি করে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে ৫৭ নম্বর ওই বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার সঙ্গে হাফ ওয়ালের ওপর টিন দিয়ে একটি বাউন্ডারি দেওয়া হচ্ছে। ভেতরে বেসরকারি অনেক সিকিউরিটি গার্ড পাহারা দিচ্ছে। দুইতলা ভবনটিতে সাদা রং করা হচ্ছে। যেটি আগে ছিল হলুদ রংয়ের।
মালামাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পিকাপ ভ্যানে করে। তবে কে কার বাসায় নিয়ে যাচ্ছে তা কেউ বলতে পারেন না। পিকাপের ড্রাইভার বলেন, মালামালগুলি ধানমন্ডিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অনেক চেষ্টা করেও মুসা বিন শমসেরের সঙ্গে কিংবা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযেগ করা সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/ইউজে/এমআই