জাবির শরীরচর্চা কেন্দ্রের বেহাল দশা
১ আগস্ট ২০১৮ ০৮:৩৪
।। তহিদুল ইসলাম, জাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটি শরীরচর্চা কেন্দ্র রয়েছে। তবে অবহেলা ও অযত্নে বহু বছরের পুরনো শরীরচর্চা কেন্দ্রটি এখন বেহাল দশা। এখানে সেই শিক্ষার্থীদের চাহিদামতো প্রয়োজনীয় শরীরচর্চার উপকরণ, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাও নেই। শুধু তাই নয়, যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় আছে এই শরীরচর্চা কেন্দ্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, শরীরচর্চা কেন্দ্রে দু’টি ফিটনেস ট্রেনিং সেন্টার থাকলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাদির অভাবে একটি সেন্টার বন্ধ পড়ে রয়েছে। অন্য ছোট একটি রুমে সামান্য কিছু উপকরণ দিয়েই চলছে এই কেন্দ্রের কার্যক্রম। এদিকে, কেন্দ্র ভবনের ছাদ ফেটে গেছে। ফলে বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে পড়ে পানি। ভবনের ভেতরের কিছু অংশ দেবেও গেছে।
এদিকে, শরীরচর্চা কেন্দ্রেই রয়েছে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের অফিস। তবে সেই অফিসের বেশ কয়েকটি রুমের সিলিং খসে পড়েছে।
শরীরচর্চা কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, শরীরচর্চা কেন্দ্রের যে ফিটনেস ট্রেনিং সেন্টারটি চালু আছে, তার অধিকাংশ যন্ত্রপাতি শারীরিক শিক্ষা বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন উৎস থেকে অনুদান হিসেবে সংগ্রহ করেছে। তবে তার পরিমাণও পর্যাপ্ত নয়। আর এই ফিটনেস ট্রেনিং সেন্টারে পেশী শক্তি বাড়ানোর জন্য সাইক্লিং মেশিন, ট্রেডমিল, ডাম্বেল, মাল্টিজিম, বারবেল ওয়েট যন্ত্রসহ অন্যান্য আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতিই নেই।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকেই শরীরচর্চা কেন্দ্রে যান। তবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এই কেন্দ্র থেকে। আর বাধ্য হয়েই মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরের বিভিন্ন ফিটনেস সেন্টারের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
মোস্তফা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে একাধিক শরীরচর্চা কেন্দ্র থাকা দরকার। কিন্তু আছে মাত্র একটি। সেখানেও যে যন্ত্রপাতি আছে, তা দিয়ে চাহিদা মেটানো কঠিন। অনেক সময় ভিড়ের কারণে লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হয়। এত ঝামেলা পোহানো সম্ভব না। এ জন্য বাইরের একটি জিমনেশিয়ামে ভর্তি হয়েছি।
জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হাবিবা ইয়াসমীন নিজেই অভিযোগ করে বলেন, জিমনেশিয়ামের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এর ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। ভয়ে আছি, কখন যেন ভেঙে পড়ে। আমরা সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষকে বহুবার বললেও এ নিয়ে তাদের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।
হাবিবা ইয়াসমীন স্বীকার করে নেন, এই কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদা মেটানো কোনোভাবেই সম্ভব না।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কয়েকদফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি টিম এসেছিল। আমরা তাদের জিমনেশিয়ামে নিয়ে গিয়েছিলাম। আসলে এটা সংস্কারের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। আমাদের এটা সংস্কারের পরিকল্পনা আছে। তবে টাকা পেলে সেটা করা সম্ভব হবে।
উপ-উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের যে মাস্টারপ্ল্যান আছে, তাতে নতুন জিমনেশিয়াম তৈরির পরিকল্পনা আছে। আমি মনে করি জিমনেশিয়ামের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পাশাপাশি স্বল্প মেয়াদে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’
সারাবাংলা/টিআর/এএস