৪ দিন পর শিক্ষামন্ত্রীর শোকবার্তা!
১ আগস্ট ২০১৮ ১৮:৩১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : গত রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। আব্দুল করিম ও দিয়া খানম মিম নামে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। গোটা শহর জুড়ে চলা বিক্ষোভে বন্ধ হয়ে যায় রাজধানীর স্বাভাবিক চলাচল।
যে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে অচল হয়ে পড়ল ঢাকা শহর সেই মৃত্যুর চারদিন পর বুধবার (১ আগস্ট) শোক জানিয়েছেন দেশের শিক্ষার্থীদের ভালোমন্দের অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রী মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের প্রতি গভীর শোক জানান। তিনি শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধৈর্য্য ধারন ও শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
এই ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী মর্মবেদনা প্রকাশ করেন। শোক বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরণের অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় সহপাঠীর মৃত্যুতে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ আমরা শিক্ষা পরিবারের সকলে শোকার্ত।’
শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে তাৎক্ষণিক সভা শেষে এই শোকবার্তা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
সভায় নুরুল ইসলাম নাহিদ এও জানান যে, উক্ত দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সড়ক পরিবহনকে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সে অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং দোষীদের গ্রেফতার করেছে। সংশ্লিষ্ট দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ অব্যাহত আছে।
মন্ত্রীর এই শোকবার্তা প্রকাশের পরে জনমনে এই প্রশ্ন জাগে যে, শিক্ষার্থীদের এই অভিভাবক গত চারদিন কোথায় ছিলেন? শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে শুধু রোববার কুর্মিটোলার দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ থাকলেও এর মধ্যেই সড়কে দুজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটে গেছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তাদের একজন আকলিমা আক্তার, মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) কুমিল্লার চান্দিনার গোমতা এলাকার গোমতা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। বালুবাহী এক দ্রুতগতির ট্রাক পিষে ফেলে আকলিমাকে, আহত হয় তার সঙ্গে থাকা আরে শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার। সেই ট্রাকটিও পালিয়ে গেছে।
ওদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব ফয়সাল নামে এক ছাত্রের ট্রাক পিষে দেওয়ার ভিডিওতে। রাজধানীর দনিয়া এলাকায় ফয়সাল নেমেছিল মিম ও আবদুল করিমের সড়ক দুর্ঘটনার বিচার চাইতে। ট্রাকের লাইসেন্স পরীক্ষা করতে চাইলে সেটি পিষে যায় ফয়সালকে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফয়সাল আশঙ্কামুক্ত।
সড়ক দুর্ঘটনা সড়ক হত্যায় রূপ নেয়ার পরেও নির্বিকার মন্ত্রী ও জাতীয় নেতারা। রোববারের জাবালে নূরের দুর্ঘটনার পরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের হাসির ছবি তিরস্কৃত হয়। পরে গণরোষের মুখে দুঃখ প্রকাশ করেন নৌমন্ত্রী। তাদের এইসব বিলম্বিত শোক ও দুঃখ প্রকাশ যেন শুধুই সামাজিকতা। এসব ঘটনা আদৌও তাদের মনে কোনো প্রভাব ফেলে কি-না সে প্রশ্নেও সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
আরো পড়ুন : আমার গেছে সন্তান, শাজাহানের কাছে সংখ্যা
সারাবাংলা/এইচএ/এমএ/এসএমএন