সৌদি আরবে আরও দুই নারী মানবাধিকার কর্মী গ্রেফতার
২ আগস্ট ২০১৮ ২০:৫৩
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মীদের ওপরে চালানো নিপীড়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরবে আরও দুই নারী মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন সামার বাদাওয়ি ও নাসিমা আল-সাদাহ। বুধবার (১ আগস্ট) মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইট ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক সারাহ লিহ হোহাইটসন এক বিবৃতি একথা জানায় বলে নিশ্চিত করেছে আল-জাজিরা।
সারাহ বলেন, সামার বাদাওয়ি ও নাসিমা আল-সাদাহকে গ্রেফতার সৌদি কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। সৌদি আরব ভিন্নমতাবলম্বীদের জন্য অতীতের মত বর্তমানেও হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে।
গত মে মাস থেকে সৌদি আরব, ঈমান আল-নাফজান, লুওজেইন আল-হাতলোল, আজিজা আল ইউসুফ, আইশা আল-মানেয়া, ইব্রাহিম মোদেমিগ ও মোহাম্মদ আল-রাবেয়াসহ এক ডজনেরও বেশি নারী মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করে। তারা সকলেই নারীদের গাড়ি চালানো ও অভিভাবকত্ব আইনের ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন। সৌদি আরবের বিদ্যমান নিয়ম অনুসারে নারীদের এখনো বিয়ে ও চাকরিসহ গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে পরিবারের বাবা বা ভাই অর্থ্যাৎ পুরুষদের কারও অনুমতি প্রয়োজন হয়।
গ্রেফতার হওয়া সামার বাদাওয়ি ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নারী সাহসিকতা পুরস্কার’ লাভ করেন। তিনি নারীদের ভোটাধিকার, স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন। তার বোন রাইফ বাদওয়ি একজন মুক্তমনা ব্লগার। ইসলাম ধর্মের সমালোচনায় করায় ২০১৪ সালে তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
নাসিমা আল-সাদাহ ২০১৫ সালে সৌদি আরবের স্থানীয় নির্বাচনে প্রথম নারী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রক্ষণশীল সৌদি আরবে গত ২৪ জুন থেকে নারীরা আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি চালানোর অনুমতি পায়। তবে এরপরই দেশটি মানবাধিকার কর্মীদের ওপর ধরপাকড় চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে তাদের দেশদ্রোহী উল্লেখ করে বলা হয়, ‘তারা বহিঃশত্রুদের সাথে যোগসাজশে দেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।’
এদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, যুবরাজ সালমান সৌদি আরবের বিভিন্ন লোক দেখানো সংস্কার কর্মসূচির মাধ্যমে পশ্চিমাদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। দেশটিতে বড় ধরনের বিনিয়োগ নিয়ে আসাই তার প্রধান লক্ষ্য। প্রকৃতপক্ষে সৌদি আরবে এখনও নারীদের দিন বদল হয়নি।
সারাবাংলা/এনএইচ
আরও পড়ুন,
গাড়ি চালাচ্ছেন সৌদি নারীরা
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার সৌদি নারী