‘ইচ্ছা করেই ধাক্কা’ বাস কেড়ে নিল আরও এক প্রাণ
৩ আগস্ট ২০১৮ ১৫:৪৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় আরও একজনের প্রাণ গেল সড়কে। শুক্রবার (৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে ‘এসপি গোল্ডেন লাইন’ পরিবহনের বাসচাপায় সাইফুল ইসলাম রানা (৩৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী মারা যান।
নিহত সাইফুল মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতাল-এর ব্রাদার ছিলেন। দুর্ঘটনার পর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সারাবাংলাকে জানান, ওই বাসটিতে কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। বাসটি বেশ জোরে আসছিল। মগবাজারের ওয়ারলেস এলাকায় এসে বাসটি প্রথমে এক রিকশাকে ধাক্কা দেয়। ওই রিকশায় এক নারী আরোহী ছিলেন। বাসের ধাক্কায় রিকশাটি সড়কে ছিটকে যায়। অল্পের জন্য ওই আরোহী রক্ষা পান।
এরপর একটি মোটর সাইকেলকে ধাক্কা দেয় ওই বাস। এতে মোটরসাইকেল আরোহী সাইফুল ইসলাম রানা ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান এবং বাসটি সাইফুলের শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায়। মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেওয়ার পর বাসটি সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকেও ধাক্কা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ‘ইচ্ছা করেই বাস চালক এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
পথচারীরা সাইফুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে যান রমনা থানার এসআই মহিবুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘‘এসপি গোল্ডেন লাইন’ বাসটি সাইফুলকে চাপা দেয়। বাসটি মাগুরা, যশোর, সাতক্ষীরা রুটে চলাচল করে। মৌচাক ফ্লাইওয়ার ব্রিজের মগবাজার ওয়ারলেস গেটের ঢাল দিয়ে নেমে বাসটি যাচ্ছিল মালিবাগের দিকে। ওয়ারলেস গেটে ঢাল দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে নামার পরই বাসটি পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।’’
সোহেলের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। নিহতের খালা রোকসানা হক হাসপাতালে লাশ শনাক্ত করেন।
সোহেলের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরুপকাঠী উপজেলায়। তিনি খিলগাঁওয়ের উত্তর গোড়ানে থাকতেন।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসেছেন। পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে। পাশাপাশি বাসের চালককেও আটক করেছে পুলিশ। ওই চালকের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দেয়।
এ ঘটনায় রাজপথে নেমে ৯ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। গত পাঁচ দিন ধরে শিক্ষার্থীরা রাজধানীর সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছে।
বুধবার (১ আগস্ট) বিকেলে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে। এরপরও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। শুক্রবারও (৩ আগস্ট) রাজধানী ঢাকার কয়েক জায়গায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছে।
নিহত দুই পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারাবাংলা/একে