ঢাকার রাস্তায় আজও নেই গণপরিবহণ
৪ আগস্ট ২০১৮ ১০:০৫
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : রাজধানীর কাজীপাড়া থেকে রোজ মতিঝিলে অফিস করেন শামসাদ নূর। সাধারণত সকাল ৭টার মধ্যে বাসা থেকে বের হতে পারলেই বাসে উঠতে পারেন। যথাসময়ে পৌঁছতে পারেন অফিসে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে গত চার পাঁচ কর্মদিবস ৬টার পরে বাসা থেকে বের হয়েছেন। এর মধ্যে দুইদিন বাস পেলেও এরপর থেকে বিভিন্নভাবে বিকল্প বাহনে কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। তবে শুক্রবার রাতে নৌমন্ত্রীর আশ্বাসের পর ভেবেছিলেন হয়তো সকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক দেখবেন। সে কারণে বাসা থেকে বের হয়েছেন সাতটার দিকে। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখতে পেলেন কোনো বাস নেই। ফার্মগেট পর্যন্ত রিকশায় যাবেন ভেবে রিকশার খোঁজে হাঁটছিলেন। কিন্তু রিকশাও ছিল সকালে সোনার হরিণের মতো।
সারাবাংলাকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই কর্মকর্তা বললেন, কিভাবে অফিস পৌঁছবেন বুঝতে পারছেন না। অথচ আজ জলদি পৌঁছানোটা খুব দরকার তার জন্য।
একই রকমভাবে কাজীপাড়া, শ্যাওড়াপাড়া, তালতলার রাস্তায় দেখা গেছে অপেক্ষমান অফিস যাত্রীর ভিড়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাস আর কিছু লেগুনা ছাড়া কোনো ধরনের গণপরিবহণ চোখে পড়েনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, এসব লেগুনার বেশিরভাগ চালকেরই বয়স ১৮ বছরের কম। কেউ কেউ তো রীতিমতো শিশু।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার হয়ে মতিঝিলের পথে হাতে গোনা তিন চারটি বিআরটিসির বাস দেখা গেছে। সেগুলোও ছিল মানুষে পরিপূর্ণ। রীতিমতো দরজা দিয়ে ঝুলে ছিলেন অফিস যাত্রীরা।
এছাড়া পুরো পথেই চিল হেঁটে যাওয়া মানুষের সারি। সঙ্গে ছিল রিকশার আধিক্য। যদিও রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা ভাড়া হেঁকেছেন দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ।
রাজধানীর বাংলাবাজার, মতিঝিল, শাপলাচত্বর, পল্টন, কাকরাইল, মিরপুর ১০, মোহাম্মদপুর, বিজয় স্মরণী, কারওয়ান বাজার, শাহবাগসহ সব সড়কেই দেখা গেছে একই অবস্থা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের নিরাপত্তার অজুহাতে সড়কে বাস বের করেননি বাস মালিকরা। সরকারি সংস্থা বিআরটিসির কিছু বাস চলছে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ অপ্রতুল। বিশেষ করে মিরপুর মতিঝিল রুটে এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও দেখা মিলছে না একটি বাসের। সব মিলিয়ে নগরবাসীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
গত ২৯ জুলাই (রোববার) কর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহণের দুইটি বাসের রেষারেষির সময় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়।
এর জের ধরে ফুঁসে ওঠে সাধারন শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নেমে এসে অবরোধ-বিক্ষোভ করতে শুরু করেন তারা। এর মধ্যে কিছু বাস ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাস বন্ধ করে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন বাস মালিক-শ্রমিকরা।
ছবি : মোহাম্মদ আতাউর রহমান
সারাবাংলা/এসএমএন