Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তৃতীয় পক্ষ নেমেছে, শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরিয়ে নিন: প্রধানমন্ত্রী


৫ আগস্ট ২০১৮ ১১:২৯

বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা:  তৃতীয় পক্ষ মাঠে নেমেছে যে কোনো ধরনের অঘটন ঘটতে পারে। তাই রাস্তায় থাকা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে শিক্ষক-অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবনে রোববার (৫ আগস্ট) ১০ জেলায় ফাইবার অপটিক কানেকটিভিটি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। যে কোনো মুহূর্তে কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে। কোনো অঘটন ঘটে গেলে তার দায় কে নেবে? অভিভাবকদের অনুরোধ আপনারা আপনাদের সন্তানদের ঘরে ফিরিয়ে নিন। তাদের লেখাপড়া মনোযোগী করে তুলুন। তাদের রাস্তায় আর থাকার দরকার নেই। ট্রাফিক পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করবে। শিক্ষার্থী লেখাপড়া শিখুক, পড়াশোনা করুক।’

সড়ক দুর্ঘটনায় ‍দুই শিক্ষার্থী নিহতের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অামরা তাদের মনোবেদনা বুঝি। তারা সহপাঠী হারিয়েছে। অন্তত আমার থেকে এই বেদনা কেউ বোঝে না। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে লাইসেন্স দেখছে, যা ইচ্ছা তাই করেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অসীম ধৈর্য ধরেছে। তারাও শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ গুজবে কান দিবেন না। যা শুনবেন, দেখবেন অন্তত যাচাই করুন। বিশেষ করে ছাত্র, যুব সমাজ ও অভিভাবদের প্রতি আমার এই আহ্বান রইল।’

তিনি বলেন, ‘দেশ আজকে ডিজিটাল। প্রযুক্তির সুবিধা যেমন আছে, অসুবিধাও আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুক, ইউটিউব ব্যবহার করুন উন্নয়নের জন্য। ভালো কাজে এগুলোর ব্যবহার করুন। কোনো ধ্বংসাত্মক কিংবা খারাপ কাজে এগুলোর ব্যবহার যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

‘প্রযুক্তির কারণে অপপ্রচারসহ নানা ধরনের ঝামেলা আমাদের পোহাতে হচ্ছে। তাই আমরা বলবো, গুজবে কান দেবেন না। অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের বলবো, কোন অপব্যবহার বা নোংরা ভাষার ব্যবহার যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারে ব্যবহার যেন না করা হয়। তারা এই মাধ্যমগুলো ভালো কাজে ব্যবহার করতে পারে।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুলিশের হুন্ডায় আগুন দেওয়া হয়েছে, বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাউছিয়া মার্কেটে ইউনিফর্ম বিক্রি বেড়ে গেছে, পলাশীতে আইডি কার্ড বানানো হচ্ছে। তৃতীয় পক্ষ এই আন্দোলনে ঢুকে গেছে। আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ে শংকিত।’

‘একটি শ্রেণী আছে তাদের কাজ হচ্ছে রিউমার তৈরি করা। আমাদের অফিসে হামলায় ১৭ জন আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের ব্যাগের ভেতর পাথর। তারা ছাত্র হলে ব্যাগের ভেতর পাথর কেন ‘

‘অনেকে বলেছে অফিসের ভেতর লাশ আছে, মেয়েদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ২০-২৫ জন গিয়ে অফিসে দেখেছে, ভেতরে কিছু পাই নাই। হামলার সময় গুলি করা হয়েছে, এসব কারা করেছে?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, `আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরির কাজ বঙ্গবন্ধুর সময় শুরু হয়েছিল। দেশের প্রথম বেতবুনিয়া ভূ উপগ্রহ এটিও তার (বঙ্গবন্ধুর) শুরু করা।বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে ৩ বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে গড়েছেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সে চেষ্টা আর অব্যাহত থাকেনি।’

দেশের মানুষের জন্য তার কাজ করার সদিচ্ছার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ওপর আমার মা বাবার ছায়া আছে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করলে মনে হয় আমার মা বাবার আত্মা শান্তি পাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, দেশের মানুষের কাছে দ্রুত সেবা প্রদানের উপায় একমাত্র উপায় ডিজিটাল পদ্ধতি। কম্পিউটার ও প্রযুক্তি বিষয়ে আমাকে সবসময় পরামর্শ দিয়েছে আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। ১৯৯৬ সালে সে আমাকে পরামর্শ দিয়েছিল কম্পিউটার ও প্রযুক্তি পণ্যের উপর ট্যাক্স কমাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের নানান ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অপপ্রচার চালানো হয়।

তাই গুজবে কান না দেওয়া ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

রাস্তায় দুর্ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তবে যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রিত করা যেন যায়। গাড়ি চালকদের আমার বলেছি ট্রাফিক নিয়ম মানতে। পথচারীদেরও আমরা বলছি, বে খেয়ালে যাতে রাস্তা পার না হয়। শিশুকাল থেকেই কোমলমতি শিশুদের ট্রাফিক রুলস শেখাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক আইন পার্লামেন্টে নীতিগত সমর্থন দিয়ে ভেটিং এর জন্য আইনমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটা আবার কেবেনিটে যাবে। সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার পার্লামেন্টে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবা মায়েদের ও অভিবাবকদের অনুরোধ করব, আপনাদের ছেলেমেয়েদের ঘরে রাখুন। কারণ এখানে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে গেছে। স্কুল কলেজে তাদের ফিরিয়ে পড়ালেখায় এদের মনযোগী হতে বলেন। আপনাদের সন্তানদের নিরাপত্তা দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব। তাদের দাবি দাওয়া সবই এক এক করে পূরণ করা হচ্ছে।’

সারাবাংলা/এনএইচ/একে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর