যুদ্ধাপরাধী মঈনুদ্দিন ঘুরছে ইন্টারপোলের নাকের ডগায়
২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৯:৩৪
সারাবাংলা ডেস্ক
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যখন বাংলাদেশের সরকার খুব জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তখনই একজন পলাতক যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিন ঘুরে বেড়াচ্ছে বেশ সাবলীলভাবে।
সম্প্রতি ব্রিটেনের জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড দ্য সান খুঁজে বের করেছে যুদ্ধাপরাধী মঈনুদ্দিনকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী হত্যায় অভিযুক্ত এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ৯ জন শিক্ষক, ৬ জন চিকিৎসক ও ৩ জন সাংবাদিককে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনাল মঈনুদ্দিনের অনুপস্থিতেই তার বিচার করে, তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। কিন্তু তখন তার সঠিক অবস্থান জানা যায়নি বিধায় তাকে দেশে ফেরানোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মঈনুদ্দিনসহ অন্য পলাতক যুদ্ধাপরাধীদের অবস্থান জানতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়। ইন্টারপোল এ বছর জুলাই মাসে ব্রিটেনের মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীদের তালিকায় মঈনুদ্দিনের নাম যুক্ত করে। যেখানে মঈনুদ্দিনের ছবি ও তার অপরাধের বিবরণ উল্লেখ করা হয়।
তবে এইসব প্রচেষ্টাকে কাঁচকলা দেখিয়ে মঈনুদ্দিন বেশ আয়েসেই ব্রিটেনের উপকণ্ঠে প্রায় ১০ লাখ পাউন্ডের একটি আলিশান বাড়িতে বাস করছে।
দ্য সান বলছে, মঈনুদ্দিন একটা কানাগলিতে বাস করে, একজন সাধারণ জনগণের মতো বাজারে যায়, মসজিদে যায়। তার জীবনযাপনে পলাতক অপরাধীর কোনো সতর্কতাই নেই। ইন্টারপোল না পেলেও মঈনুদ্দীনকে খুঁজে পেতে দ্য সানের কোনো পরিশ্রমই করতে হয়নি।
মঈনুদ্দিনের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, ইন্টারপোলের চেষ্টায় আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।
মঈনুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে কথা বললে দ্য সানের সাংবাদিককে মঈনুদ্দীন বলে, এগুলো সব রাবিশ! আমার উকিল সেই লোক দেখানো বিচারে যোগও দেয়নি। আমি ইন্টারপোলের লাল তালিকার এ নোটিশের বিরুদ্ধে আপিলও করেছি।
৬৯ বছর বয়সী মঈনুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধের পরেই ব্রিটেন চলে যায়। সেখানে সে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে পরিচালক হিসেবে কাজ করে অবসরে যান। তার স্ত্রী ফরিদা (৫৭) এবং চার সন্তানসহ সে ব্রিটেনের নাগরিক।
দ্য সানের ওই সাংবাদিক প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে মঈনুদ্দীনের একটি ছবিও দেখেছেন। মঈনুদ্দীনের বাড়ির দেওয়ালে থাকা এই ছবিটি কোনো এক ইসলামি অনুষ্ঠান থেকে তোলা।
শুধু ইন্টারপোল নয়, মঈনুদ্দীনকে গ্রেফতার করতে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সহায়তাও চেয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ।
সারাবাংলা/এমএ/একে