আজও গণপরিবহন সংকট, দুর্ভোগে অফিসগামী মানুষ
৭ আগস্ট ২০১৮ ১০:৫৫
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: টানা আন্দোলন আর অবরোধের পর ফের গণপরিবহন চলাচল হলেও সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে গণপরিবহন সংকট। প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহন কম থাকায় বিপাকে পড়ছেন অফিসগামী মানুষেরা। গণপরিবহনের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌছাতে পারছে না অপেক্ষমান যাত্রীরা।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে আবার চলথে শুরু করেছে গণপরিবহন। আজ দ্বিতীয় দিনেও সংকট দেখা দিয়েছে গণপরিবহনে। দুএকটা বাস চললেও আগে থেকে যাত্রীবোঝায় থাকায় উঠতে পারছে না অধিকাংশ অপেক্ষমান যাত্রী। এ জন্য অফিসগামী মানুষেরা গণপরিবহনের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও বাস না পেয়ে কেউ কেউ পায়ে হেঁটে রওনা দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার রিকশা ও ভ্যান গাড়িতে করে যাচ্ছেন অফিসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর আবদুল্লাহপুর, রামপুরা, মহাখালী, গাবতলী, যাত্রাবাড়ি, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পরিবহন সংকট। কোথাও কোথাও গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি খুব একটা। আবার কোথাও কোথাও বাস চলাচল করলেও নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলেও মিলছে না প্রতিকার। নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।
যাত্রাবাড়ি থেকে শাহবাগ যাওয়ার জন্য গণপরিবহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মিজানুর রহমান নামে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সহকারী সম্পর্ক উন্নয়ণ কর্মকর্তা। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সকাল আটটার দিকে মোড়ে এসে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রায় ১ ঘণ্টা পর গাবতলীগামী ৮ নাম্বার পরিবহন নামে একটি বাস পেলেও সেটিতে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৪গুণ। কিন্তু অন্য কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়েই যাচ্ছি। তার মতে, অন্যদিন তার কর্মস্থলে যেতে ভাড়া দিতে হয় ১০ টাকা। আজকে তাকে ৪০ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে।
তিনি জানান, তার রুটে নিয়মিতভাবে ট্রান্সসিলভা, খাজাবাবাসহ আরও কয়েকটি পরিবহনের বাস চলাচল করলেও আজ সেগুলো চলছে না।
একই কথা জানালেন আবদুল্লাহপুরগামী যাত্রী নাজনীন আরা জুঁই। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সকাল সাড়ে সাতটা থেকে মানিক নগর মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি বাসের জন্য। কিন্তু সকাল নয়টা পর্যন্ত কোনো বাস পেলাম না। তার একটু পর তুরাগ বাস পেলেও সেটি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা। অন্যদিন ভাড়া ছিল ২০ টাকা। আজকে চারগুণ ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। এখন বাস ছাড়া যদি রিকশা বা সিএনজি দিয়ে সেদিকে যাই তাহলে তিন চার শ টাকা খরচ করতে হবে।
তিনি জানান, ওই রাস্তায় অনাবিল, সালসাবিল, তুরাগসহ আরও অনেকগুলো বাস চললেও আজ তেমন এসব বাস খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।
পরিবহন সংকটের বিষয়ে আট নাম্বার বাসের চালক সাজ্জাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ি ক্যান চলে না সেটা ভাই জানি না। তবে মনে হয় রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালানোর কারণে হতে পারে। যেগুলো চলছে সেগুলো ভাড়া বেশি নিচ্ছে কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়ি না থাকায় সবাই যাইতে চাই, এ জন্য ভাড়া বেশি তো নিবোই।’
তবে সায়েদাবাদ বাস মালিক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজা আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ শুনিনি। এখন আপনি যেহেতু জানিয়েছেন বিষয়টা খোঁজ নিয়ে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেব। তবে বাস সংকটের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তার কাছে নেই বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/এসএইচ/এমআই