সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে সবার আগে গণমাধ্যমকে দ্বৈতনীতি পরিহার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জঙ্গিবাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে এক পাল্লায় মাপলে হবে না। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের চেতনাধারী হতে হবে।‘
রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিউটটে বৃহস্পতিবার ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা: আমাদের গণমাধ্যম’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
প্রেস ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান ও দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক-কলামিস্ট কামাল লোহানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক, ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক সোহরাব হাসান, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খোন্দকার মুনীরুজ্জামান, আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, একাত্তর টেলিভিশনের ডেপুটি এডিটর মোজাম্মেল বাবু।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে আছে। এখানে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক। তবে একটি স্থানে আমি হতাশ হই। গণমাধ্যমকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সঠিকভাবে লালন করতে পারছে না। তারা গণতন্ত্রের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জঙ্গিবাদ, রাজাকারদের দোসর খালেদা জিয়াকে মিলিয়ে ফেলেন। যেটি ঠিক নয়।’
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক কামাল লোহানী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়ে পাকিস্তান সরকার ও তার দোসরদের খবর বন্ধ করে দিয়েছিল। সেদিন যে চেতনায় সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ এ কর্মসূচি দিয়েছিল আজকের দিনে তা ভাবাও যায় না।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ঐক্য, চেতনা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা প্রমাণে বেশি দূর যেতে হবে না। ওই আন্দোলন এখন প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সরে গিয়ে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের (বনানী) জনশূন্য একটি এলাকায় গিয়েছে। সাংবাদিক উৎপল দাস ২ মাস পর ফিরে এসেছে। সে কোথায় ছিল তাকে কারা নিয়ে গিয়েছিল সে খবর কি কেউ নিয়েছেন?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাষ্ট্রের ভীত রচনা করেছিল। আমরা সেই ভিত্তির ওপর দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করলে কেউই দুর্নীতি করতে পারে না, মিথ্যা কথা বলতে পারে না।’
গণমাধ্যমে জনগণের ষোল-আনা মালিকানা না থাকলে তাকে গণমাধ্যম বলা যায় না উল্লেখ করে ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে দেশে যত গণমাধ্যম হয়েছে সবাই পুরোপুরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে পারেনি।’
এ সময় অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার দু’টি পত্রিকার নাম উল্লেখ করে সেগুলোকে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত ঘরনার বলে উল্লেখ করেন।
সারাবাংলা/এমএস/একে/আইজেকে