Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বগুড়ায় ‘অদ্ভুত’ বিদ্যুৎ বিলের ফাঁদে গ্রাহকরা


৮ আগস্ট ২০১৮ ০৯:৫৩
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বগুড়া : ‘অদ্ভুত’ বিলের ফাঁদে পড়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বগুড়ার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। অভিযোগ উঠেছে, গ্রাহকদের বিদ্যুৎ মিটার পরিবর্তনে বাধ্য করতে বিদ্যুৎ বিভাগের নর্দান ইলেকট্রিসিট সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) আওতাধীন বগুড়ার বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগগুলো থেকে এই ভুতড়ে বিল দেওয়া হচ্ছে।

মিটারে ব্যবহৃত ইউনিট যাই হোক না কেন খেয়াল-খুশি মতো বিল করে ডিজিটাল মিটার স্থাপনের জন্য আবার অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় গ্রাহকরা। নিয়ম না থাকলেও এই বিলের নাম দেয়া হয়েছে ‘এস্টিমেটেড’ ইউনিট বিল।

জানা গেছে, বগুড়া শহর এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের নেসকোর আওতায় তিনটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ রয়েছে। এর গ্রাহক সংখ্যা এক লাখ ৩০ হাজারের ওপরে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, সরকারি নির্দেশনায় এনালগ মিটারগুলো ডিজিটাল করা হচ্ছে কয়েক বছর ধরে। যারা মিটার পরিবর্তন করছে না, তাদের এস্টিমেটেড বিল করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, এক্ষেত্রে আগের মাসগুলোর বিলের পরিমানের সঙ্গে গড় করে কিছু বাড়তি ইউনিট যোগ করে গ্রাহকদের কাছে বিল দেওয়া হচ্ছে। এটা করা হচ্ছে গ্রাহকদের ওপর মিটার পরিবর্তনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে। তবে যে বিল করা হচ্ছে তা গ্রাহকদের দিতেই হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগের কর্মকর্তরা।

অভিযোগ উঠেছে এই বাড়তি বিলে নিয়ে গ্রাহকদের হয়রানীর পরিমাণ বেড়েই চলছে। বগুড়ার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগগুলো জানিয়েছে, তাদের মোট সংযোগের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ এনালগ মিটার ডিজিটাল মিটারে পরিণত করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যুত বিভাগের নিয়ম অনুযায়ি মিটার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের শুধুমাত্র মিটার কিনে দিলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগ থেকে তা কোন ফি ছাড়াই স্থাপন করে দেওয়ার কথা। তবে এক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। মিটার পরিবর্তনের ধাপে সৃষ্টি হয়েছে মধ্যসত্বভোগী এক শ্রেণির দালাল। তারা মিটার রিডারদের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ বিভাগের বাড়তি বিলের কপিটি গ্রাহকদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলছে মিটার পরিবর্তন না করা পর্যন্ত বাড়তি বিলের (এসিটমেটেডি ইউনিট বিল) পরিমাণ বাড়তেই থাকবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেও এতে কোন লাভ হবে না। মিটারের দামসহ একটি মিটার স্থাপনের জন্য নেওয়া হচ্ছে দুই হাজার টাকা। অথচ বাজারে একটি ডিজিটাল মিটারের দাম এক হাজার ১২০ টাকা থেকে ১২শ টাকা। এক্ষেত্রে মিটার পরিবর্তনের জন্য গ্রাহকদের বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ৮০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এই টাকার ভাগ আবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

আবার মিটার পরিবর্তনের জন্য যে এস্টিমেটেড ইউনিটের বিল করা হয় তা সমন্বয়ের জন্যও হয়রানী ও বাড়তি খরচ করতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে মিটার রিডার ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিদ্যুৎ বিল পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি সংশ্লিস্টরা তাদের ভাড়াটে বা ব্যক্তিগতভাবে নিয়োগ করা লোকদের মাধ্যমে মিটার রিডিং ও বিল বিতরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে বগুড়ার বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণের তিনটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা  মিটার পরিবর্তনের জন্য কিছু এস্টিমেটেড ইইনিট বিল করার কথা স্বীকার করেন। তবে বাইরের লোক দিয়ে মিটার রিডিং ও বিল বিতরনের বিষয়টি অস্বীকার করেন বগুড়া বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (৩) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম চৌধুরী।

অন্যদিকে নেসকো বগুড়ার তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এস্টিমেটেড ইউনিট বিল বিদ্যুৎ বিভাগের কোন আইনে উল্লেখ রয়েছে কি না জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘সবকিছু আইনে উল্লেখ থাকে না। এটা করা হয়েছে গ্রাহকদের সেবার মান বাড়িয়ে আরো কাছে আনার জন্য।’

যে বিল করা হয়, তা গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হবে বলেও জানালেন এই কর্মকর্তা। গ্রাহক হয়রানীর বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।

সারাবাংলা/এসএমএন

বিদ্যুৎ বিল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর