বিএসএমএমইউতে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম
৮ আগস্ট ২০১৮ ১১:১৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : প্রখ্যাত আলোকচিত্রী এবং দৃক ও পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয় থেকে তাকে বের করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউ’তে নেওয়া হয়।
বর্তমানে তিনি ৫ম তলার ৫১২ নম্বর কেবিনে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (মিডিয়া) উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শহিদুল আলমকে ফের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুণ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালত থেকে আমাদের নির্দেশনা আছে। উনাকে পরীক্ষা করতে হবে। ট্রিটমেন্ট দিতে হবে এবং সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দিতে হবে। এখন পর্যন্ত উনার পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ীই আগাচ্ছি। শহিদুল সাহেবকে এখনো ভর্তি করা হয়নি। প্রয়োজন হলে আমরা সেটা করবো।’
বিএসএমএমইউ এর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শহিদুল আলমকে হাসপাতালে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে কেবিনে রেখে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইসিজি, এক্সরে, রক্তচাপ, শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ, চেস্ট মুভমেন্ট এবং পালস।
সূত্রটি সারাবাংলাকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। সব পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত মন্তব্য করা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের চিকিৎসার জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেখানে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বিএম আবদুল্লাহ, কার্ডিওলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারিসুল হক, অর্থোপেডিক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী এবং সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তৌহিদুল আলম।
সূত্রটি জানায়, নিয়ম অনুযায়ী এই ধরনের রোগী আসলে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হয়। এরপর তার যে সমস্যা হয় সে অনুযায়ী সেই বিভাগের চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা শুরু হয়।
গত রোববার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহিদুল আলমকে তার বাসা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার কাজী শফিউল আহমেদের বরাত দিয়ে শহিদুল আলমের পার্টনার অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ সারাবাংলা’কে বলেন, একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শহিদুল আলমকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (৬ আগস্ট) শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মেহেদী হাসান। এরপর আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহারে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন নিয়ে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ও উসকানি ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
রিমান্ড আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করা হলে শুনানি শেষে শহিদুল আলমকে দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সৈয়দ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবারের (৯ জুলাই) মধ্যে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/জেএ/ইউজে/এএস