লবণের গাড়ি ব্যবহার করে আসছে ইয়াবার চালান
৮ আগস্ট ২০১৮ ১৪:৩৭ | আপডেট: ৮ আগস্ট ২০১৮ ১৬:০৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ঢাকার পূর্বাচল এলাকা থেকে র্যাব যে ২ লাখ ৬ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করেছে তা লবণের গাড়ি ব্যবহার করে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়। এরা হলেন, মানিক মিয়া (২৭), মাসুদ মিয়া (৪০), আব্দুল খালেক (২৮) ও আরিফ (২২)।
বুধবার (৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাবের কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ থাকায় লবণের চাহিদা অনেক বেশি। প্রতিদিন লবণ আসছে রাজধানীতে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবার চালান নিয়ে আসছে। এরকম একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই র্যাব-১ এর একটি দল পুর্বাচল এলাকায় অবস্থান নিয়ে গতকাল (৭ আগষ্ট) একটি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান থেকে ২ লাখ ৬ হাজার ইয়াবার চালান জব্দ করে। ট্রাকের ড্রাইভারের পায়ের স্থান থেকে ১০ হাজার পিস ও কাভার্ড ভ্যানের ওপরে বিশেষ কায়দায় ঝালাই করে এক লাখ ৯৬ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে র্যাবের পরিচালক মুফতি খান বলেন, গত ২৮ জুলাই গ্রেফতারকৃতরা টেকনাফে ট্রাক নিয়ে যায়। সেখানে লবণ ভর্তি করে ৩ আগস্ট ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। টেকনাফ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত র্যাবের ৫টি চেক পোস্ট থাকায় ব্যাপক কড়াকড়ি মনে করে ইয়াবার চালান তারা গাড়িতে না নিয়েই রওয়ানা হয়। রফিক নামে এক ব্যক্তির সাথে তাদের কথা হয়। রফিক তাদের জানায়, সাগর পথে এসে চকরিয়াতে তাদের হাতে ইয়াবার চালান তুলে দেবে। সেই অনুযায়ী গত ৫ আগস্ট চকরিয়াতে সাগর পথে আনা ইয়াবার চালান তুলে দেয় রফিক। এরপর সেখানে একটি ওয়ার্কশপে বিশেষ ব্যবস্থায় বাক্স বানিয়ে ইয়াবা লুকিয়ে রাখে গ্রেফতারকৃতরা। এরপর তারা রওয়ানা হয়ে কুমিল্লায় বিশ্রাম নেয়। কুমিল্লায় ইয়াবা সিন্ডিকেটের একটি দল আছে। তাদের কাজ হলো কুমিল্লা-ঢাকা সড়ক দিয়ে যাতে নিরাপদে ইয়াবা চালান পার করতে পারে। ইয়াবার চালান ঢাকার কেরানীগঞ্জে নামিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সিন্ডিকেটের নির্দেশনায় ইয়াবার চালান নিয়ে পুর্বাচল হাইওয়ে দিয়ে সাভারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক তথ্যে জানতে পেরেছেন, এই সিন্ডিকেটে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য কাজ করে। গ্রেফতার চারজন সবাই মোটর শ্রমিক। তবে তারা কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেনি। টাকার বিনিময়ে তারা এ কাজ করে থাকে। এক বছর ধরে তারা এই কাজ করছে। এর আগে তারা আরও ৮ বার ইয়াবা বহন করে ঢাকায় এনেছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের ল্যান্ড রুট অনেক বড়। বাংলাদেশের সাগর রুটও অনেক বড়। র্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর থেকে ইয়াবা আনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে বন্ধ হয়নি। আগের চেয়ে বহন করাও কঠিন হয়েছে। অভিযানের ফলে অবস্থার আরও উন্নতি হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এর পেছনে কারা জড়িত, কোথায় যেতো ইয়াবার চালান, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে এর সবকিছু খুঁজে বের করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর সিও সারওয়ার বিন কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম