খালেদার মামলায় বাকি যুক্তিতর্ক ৩-৪ জানুয়ারি
২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৫:১২
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলারও বাকি যুক্তিতর্কের জন্য আগামী বছরের ৩ ও ৪ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত। বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক ড. আক্তারুজ্জামান বৃহস্পতিবার নতুন এ দিন ঠিক করেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় খালেদা জিয়া হাজিরা দেওয়ার জন্য বকশীবাজারে বিশেষ আদালতে আসেন। এর ১০ মিনিট পর খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়। খালেদা জিয়ার হাজিরা উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আদালত প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া আদালতের প্রধান ফটকে স্ক্যানার বসিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে আগতদের ঢোকানো হয়
খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তিতর্ক শুনানিতে বলেন, ট্রাস্টের একটা পয়সাও তছরুপ হয়নি। এই টাস্ট্রের সঙ্গে খালেদা জিয়া কোনোভাবেই জড়িত নন।
মাহবুব হোসেন বলেন, এই মামলাটি রাজনৈতিক কালিমাযুক্ত। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটি একটি হালকা মামলা। ১৭ বছর পর হঠাৎ প্রদীপ জ্বলে উঠেছে। এটি একটি অশুভ মামলা।
তিনি বলেন, এখনো অনেক বিচারক আছেন, যারা আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে ন্যায়বিচার করেন। তারা ইতিহাস হয়ে থাকবেন। যদি বিচারক ন্যায় বিচার করেন তিনি ইতিহাসে নজির হয়ে থাকতে পারেন। অন্যথায় কলঙ্কিতও হতে পারেন।
খালেদার আইনজীবী বলেন, আমাদের দেশে যে ক্ষমতায় থাকে তারা চায় আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লড়তে চায়। আমরা আশা করছি, আল্লাহকে হাজির নাজির রেখে মাননীয় আদালত ন্যায়বিচার করবেন।’
তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে ধাওয়া করা হচ্ছে, নিশ্বাস ফেলানোর সময় পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া মাথা ঠাণ্ডা করে এই মামলা লড়তেছেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, তিনি সভ্রান্ত পরিবার থেকে এসেছেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, একটা মানুষ কতটা নিঃস্বার্থে কাজ করেছেন। তিনি কখনো রাজপ্রাসাদে বসবাস করেননি।
তিনি আরো বলেন, ‘মূলত বিদেশ থেকে যে টাকা এসেছে এটি শুধু মাত্র শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাতের জন্য, তার নাম স্মরণ করার জন্য।’
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন টাকাটি এসে দুটি ট্রাস্টে ভাগ করা হয়েছে। এখানে মোস্তাফিজুর রহমানের টাকা হালাল দেখানো হয়েছে এবং খালেদা জিয়ার টাকা হারাম দেখানো হয়েছে। মাননীয় আদালত এটি সব রাজনৈতিক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রাজধানীর রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুদক।
এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরু করেন।
এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আসামি ছয়জন। অপর পাঁচ আসামি হলেন—খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মোমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. সিদ্দিকী ও মোমিনুর মামলার শুরু থেকেই পলাতক। আর তারেক রহমান গত ৯ বছর ধরে লন্ডনে রয়েছেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
সারাবাংলা/এআই/একে