ওয়াশিংটনে পরিবেশিত হচ্ছে গীতিআলেখ্য চন্দ্রাবতী
৯ আগস্ট ২০১৮ ১৫:৪২
।। শিব্বীর আহমেদ ।।
ওয়াশিংটন থেকে: যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পরিবেশিত হতে যাচ্ছে মৈমনসিংহ গীতিআলেখ্য ‘চন্দ্রাবতী’। আগামী শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ভার্জিনিয়া আলেকজান্দ্রিয়ার থমাস এডিসন হাইস্কুলে এটি পরিবেশন করবে বৃহত্তর ওয়াশিংটনের সাংস্কৃতিক সংগঠন একতারা।
ষোড়শ শতকের প্রখ্যাত কবি দ্বিজবংশী দাসের কন্যা চন্দ্রাবতী। তার মায়ের নাম সুলোচনা। জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ শহরের অদূরবর্তী পাতুয়াইর গ্রাম। চন্দ্রাবতীর বাল্যজীবনে প্রেম আসে। দ্বিজবংশী দাসের কন্যা চন্দ্রাবতী একদিন পূজার জন্য ফুল তুলতে গেলে সন্ধ্যা গ্রামের জয়ানন্দের সাথে দেখা হয়। প্রথম দর্শনেই জয়ানন্দ চন্দ্রাবতীর প্রেমে পড়ে যান এবং প্রেম নিবেদন করেন। ধীরে ধীরে চন্দ্রাবতীর সঙ্গে জয়ানন্দের প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়। জয়ানন্দ ছিলেন ব্রাহ্মণসন্তান। দু’জনের মধ্যকার সম্পর্ক সফল পরিণতির দিকেই এগোয়। পিতা দ্বিজবংশীর সম্মতিতেই দু’জনের বিয়ে স্থির হয়।
কিন্তু বিয়ের ঠিক আগেই জয়ানন্দের জীবনে আসে অপর এক মুসলিম তরুণী। এতে চন্দ্রাবতীর আসন্ন প্রণয়কাব্য করুণ উপাখ্যানে পরিণত হয়। গীতিকাব্যটি রচনা করেছেন নয়ানচাঁদ ঘোষ, আনুমানিক ২৫০ বছর আগে। নেওয়া হয়েছে দীনেশচন্দ্র সেন সংকলিত মৈমনসিংহ গীতিকা থেকে।
মৈমনসিংহ গীতিকাগুলোতে হিন্দু ও মুসলমান দুটি সংস্কৃতিই দেখতে পাওয়া যায়। এদের বৈশিষ্ট্য এমন যে, প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে প্রধানত ধর্মাশ্রিত হলেও এদের উপর ধর্মের প্রভাব খুবই অল্প। এগুলি অধিকাংশই প্রণয়মূলক। এদের মধ্যে ফুটে উঠেছে পূর্ববঙ্গের পল্লী-জীবনের অপূর্ব আলেখ্য। এই পল্লী-জীবনের পটভূমিকায় বর্ণিত হয়েছে নায়ক নায়িকাদের প্রেম ভালবাসা। ষোড়শ শতকের প্রথম বাঙালি মহিলা কবি চন্দ্রাবতী জীবন কাহিনীই ‘চন্দ্রাবতী’ পালায় পর্যবসিত হয়েছে।
গীতিআলেখ্য ‘চন্দ্রাবতী’তে ওয়াশিংটন প্রবাসী নূতন প্রজন্মের শিল্পীরা অভিনয় করবেন। এর আগে, ২০১৫ সালে মৈমনসিংহ গীতিআলেখ্য ‘মহুয়া’ পরিবেশন করে একতারা।
সারাবাংলা/এএস