বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধে হুমকিতে আমন চাষ
১০ আগস্ট ২০১৮ ১১:৫৫ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০১৮ ১২:৪৭
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
দিনাজপুর: শ্রাবণ মাস প্রায় শেষ হয়ে এলেও দিনাজপুরে দেখা নেই বৃষ্টির। তীব্র গরমের মধ্যেও বিদ্যুতের লাগাতার লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে জমিতে সেচ দিতে না পারায় কৃষকের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। এদিকে জমি ফেটে চৌচির হয়ে সদ্য রোপনকৃত চারা নষ্ট হওয়ার পথে। ফলে হুমকিতে রয়েছে চলতি আমন চাষ।
দিনাজপুর বড়পুকুরিয়ায় কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের অভাবে কাজ করতে না পারায় লোকসান গুনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে উত্তরের জেলাগুলোর অনেক কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান।
বড়পুকুরিয়া খনিতে উৎপাদিত কয়লা সংকটের কারণে দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, দিনাজপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোর বিদ্যুৎ লাইনে লো-ভোল্টেজ ও লোডশেডিং সমস্যা দেখা দিয়েছে।
দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলার রাঙ্গামাটি এলাকার কৃষক মো. আজম সারাবাংলা’কে বলেন, চারদিকে কৃষকরা আমন ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত। কিন্তু বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি সরবরাহ করাই একমাত্র পথ। লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে সেই পথও বন্ধ হয়ে গেছে। সেচ দিতে না পারায় জমি ফেটে হচ্ছে চৌচির হয়ে চারা বিনষ্ট হচ্ছে। দ্রুত সেচ দিতে না পারলে চলতি আমন চাষ বাঁধাগ্রস্ত হবে।
নর্দার্ন ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুবেল হোসেন সারাবাংলা’কে জানান, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সিরাজগঞ্জ থেকে দিনাজপুর ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। সরবরাহের লাইন দীর্ঘ হওয়ার কারণেই এই লো-ভোল্টেজ হচ্ছে।
তিনি জানান, স্বাভাবিক চাহিদা ২০ মেগাওয়াট থাকলেও বালুবাড়ী পাওয়ার হাউজ কন্ট্রোল রুম গড়ে মাত্র ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাচ্ছে। যে কারণে হচ্ছে লোডশেডিং। দিনাজপুর শহরের চার ভাগের তিন ভাগ এই কন্ট্রোল রুমের আওতায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম জানান, ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র জেনারেল ওভার হেলিং কাজের জন্য বন্ধ রাখা হয়। পরে পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ না থাকায় গত ২৯ জুন বন্ধ হয়ে যায় পুরো তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৩টি ইউনিট চালু রাখতে হলে দিনে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন। কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি যত দ্রুত সম্ভব চালু করতে প্রয়োজনীয় সকল কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। আশা করছি আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি কমে আসবে।
সারাবাংলা/এমআইআর/এএস