রোবট নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে ৫ কিশোর-কিশোরী
১১ আগস্ট ২০১৮ ১৮:৪৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নবায়নযোগ্য জ্বালানি যখন বৈশ্বিক চাহিদা, তখন তা থেকে পিছিয়ে থাকছে না রোবটও। আধুনিক কলকব্জার বিশ্বে তাই নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংস্থানে রোবটকে কাজে লাগানোর কথা বেশ জোরেশোরেই উঠছে। যার প্রমাণ এবারের আন্তর্জাতিক ‘ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতা। মেক্সিকোতে এবারের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
১৪ থেকে ১৮ বছরের বয়সী শিক্ষার্থীদের এই দলে রয়েছে আনাহিতা আনোয়ারা, লালেহ নাজ বার্গম্যান হোসেন, আরমান খসরু, রাজিন আলী ও সুজয় মাহমুদ। এরা রাজধানীর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল স্কলাস্টিকা, সানবীম ও সার্জন উইলিয়ামসের শিক্ষার্থী।
রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৫৭টি দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আগামী ১৫ থেকে ১৮ আগস্ট মেক্সিকোর রাজধানীর মেক্সিকো সিটিতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নিতে রোববার (১২ আগস্ট) ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের দলটি ঢাকা ছাড়বে। তাদের সঙ্গে মেন্টর হিসেবে থাকবেন সামস জাবের। এই পাঁচ শিক্ষার্থী যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে, সেই টেক একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সামস জাবের জানান, আমাদের দেশের শিক্ষা কারিকুলামের ভেতরে থেকে প্রযুক্তিভিত্তিক এমন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ অনেক কঠিন। তারপরও আমরা এসব শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিভিত্তিক মননশীলতায় আগ্রহী করতে পারছি।
মেক্সিকোতে এবারের প্রতিযোগিতায় মূল থিম পারস্পারিক সহযোগিতা। এখানে প্রতি তিন দেশ মিলে সেশনভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। প্রতিযোগিতা বলা হলেও এর মাধ্যমে মূলত পারস্পারিক সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরিই প্রধান লক্ষ্য। সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উড়বে— এটি গৌরবের বিষয়।
জানা গেছে, এবারের রোবটিক প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিং ১৪টি ‘গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জ’ চিহ্নিত করেছে। প্রতিযোগীরা এ সমস্যাগুলো সমাধানের পথ খুঁজবেন। এতে জ্বালানি শক্তির প্ল্যান্ট, নতুন জ্বালানি শক্তির সম্ভাবনা, সুসংহত শক্তিশালী ও টেকসই জ্বালানি সংবহন ব্যবস্থা নিয়ে চলবে প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতার মূল আয়োজক ‘ফার্স্ট গ্লোবাল’। তারা প্রতিবছর ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় আবহে বেড়ে ওঠা স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে প্রতিটি দেশ থেকে প্রতিযোগী নির্বাচন করে থাকে। পাশাপাশি বৈশ্বিক চাহিদা নিরূপণ করে ওই প্রতিযোগিতা থেকে তার সমাধানের বার্তা দেওয়া হয়।
প্রযুক্তিভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় প্রতিটি দেশকে আয়োজকদের পাঠানো রোবট কিটের সাহায্যে একটি করে রোবট তৈরি করতে হয়, যা পাওয়ার প্ল্যান্টকে ফুয়েল করতে পারে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্ল্যান্ট তৈরির কাজে সহায়তা করতে পারে।
আয়োজনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী আনাহিতা আনোয়ারা জানায়, গতবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রথম রাউন্ডে ১৭৫টি দেশের মধ্যে প্রথম হয়। পরে সময় ও কিছু ত্রুটির কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে এবার আরও ভালো করার প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ঈশিতা আজাদ বলেন, সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা যা করেছে সেটি একটি প্রচেষ্টা। যার মাধ্যমে দেশের সুনাম বাড়াতে চেয়েছে। এ প্রতিযোগিতাও ঠিক তেমনই। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। বাচ্চারা যে সারাদিন মোবাইল-আইপ্যাডে পড়ে থাকে, তার একটি ইতিবাচক ফলাফল এটি। প্রযুক্তির সঠিক ব্যাবহারের মাধ্যমে তারা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা অর্জন করছে।
সারাবাংলা/এমএস/টিআর