ক্ষতিপূরণ পেয়ে আদালতকে ধন্যবাদ জানালেন জিহাদের বাবা
১২ আগস্ট ২০১৮ ২০:০২
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: চার বছর আগে রাজধানীর শাহজাহানপুরে পাইপে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের বাবা ২০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ পাওয়ায় আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। টাকা পেয়ে তিনি সর্বোচ্চ আদালত, প্রধান বিচারপতি, সংশ্লিষ্ট আইনজীবীসহ গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান।
রোববার (১২ আগস্ট) শিশু জিহাদের বাবা বাবা নাসির উদ্দিন সারাবাংলা’কে এ তথ্য জানান। এ সময় তিনি জানান, এ টাকা দিয়ে শিশু জিহাদের নামে মসজিদে কিছু অংশ দান করবেন, কিছু দিয়ে ছেলের রুহের মাগফেরাতে দোয়া অনুষ্ঠান করবেন এবং বাকি টাকা ব্যাংকে রেখে দেবেন।
নাসির উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে গত ৬ আগস্ট উত্তরা ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা দু’টি চেক ও পে অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
শিশু জিহাদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম জানান, ফায়ার সার্ভিস ১০ লাখ টাকার পে অর্ডার এবং রেলওয়ে ১০ লাখ টাকার চেক দিয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু ১৪ তারিখ (১৪ আগস্ট) আদালতে মামলাটির তারিখ আছে। এর মধ্যে আমি হলফনামা না পাওয়া পর্যন্ত তো বিষয়টি পরিষ্কার করে বলতে পারব না।
তবে জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘গত ৬ তারিখ আমাকে ডেকে নিয়ে চেক দিয়েছে। আমি ও আমার স্ত্রী খাদিজার নামে উত্তরা ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় যৌথ অ্যাকাউন্ট খুলেছি। গত বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) চেক জমা দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাসার কাছে শাজাহানপুর রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে যায় শিশু জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে জিহাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ‘চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’র পক্ষে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম।
পরে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিশু জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে শিশু জিহাদের পরিবারকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা (মোট ২০ লাখ টাকা) ৯০ দিনের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করলে গত ৫ আগস্ট সেটি খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপরই আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিস।
মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন শিশু জিহাদের বাবার নাছির উদ্দিন। তাদের গ্রামের বাড়ী শরীয়তপুরে। দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে শাহজাহানপুরে থাকেন তিনি। বড় মেয়ের নাম স্বর্ণা, মেজো ছেলে জিসান ও ছোট ছেলে শাজাহানপুর রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে প্রাণ হারানো জিহাদ।
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর