Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মন্ত্রী-এমপি-সচিবদের সই জাল, আটক ৪


১৩ আগস্ট ২০১৮ ১৮:৫১

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সচিবদের সই জাল করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের চাকরির সুপারিশনামায় বসিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সরকারি হাসপাতালের দুই নার্সসহ চার জনকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সোমবার (১৩ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে সিআইডি কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার (সিরিয়াস ক্রাইম) সৈয়দা জান্নাত আরা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, এই চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে সই জাল করে আসছে। ২০১৬ সালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নার্সিং নিয়োগে বেশ কয়েকজনের সই জাল করে একটি চক্র। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সইও আছে। প্রতিটি সইয়ের জন্য একেকজন ৩০ হাজার করে দিতে হতো চাকরিপ্রার্থীকে। সেই টাকা জমা দেওয়া হতো সংশ্লিষ্ট দফতরে।

সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করার পর চক্রটির মূল হোতাসহ চার জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এর মধ্যে আনিসুর রহমানকে গত তিন মাস আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তিনি ঢামেক হাসপাতালে স্টুয়ার্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর অফিস সহকারী আব্দুল কুদ্দুস মিয়াকে (৪৫) গতকাল (রোববার) কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। কুদ্দুস মিয়া কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের অফিস সহকারী পদে কর্মরত। এছাড়া সিনিয়র স্টাফ নার্স আবু ইউসুফকে (৩৬) চাঁদপুর ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুহুল বাসার তালুকদারকে বাঘেরহাট থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, এর আগে আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আনিসুর সই জাল করে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি আরও স্বীকার করেছেন, ছয় থেকে সাত বছর ধরে মন্ত্রী, এমপি, সচিব ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সই জাল করে আসছিলেন। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ওই নিয়োগ সুপারিশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে হোসেন বাদশাহসহ বেশ কয়েকজন সচিবের সই জাল করা হয়। এসব সুপারিশের ভিত্তিতে অনেকের চাকরি হয়। বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থীরা চক্রটিকে প্রতিটি সইয়ের বিপরীতে ৩০ হাজার করে টাকা দিত।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালের মামলা হলেও মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মন্ত্রী ও সচিবদের সই জাল করে চাকরির সুপারিশ করা অত্যান্ত ভয়াবহ। তাছাড়া মূল হোতা আব্দুল কুদ্দুস বিভিন্ন চোরাই মোবাইল সিম ও সেট সংগ্রহ করে মন্ত্রীদের পিএস সেজে ফোন করত বিভিন্ন দফতরে, যা কুদ্দুস প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া আনিসুরের জবানবন্দিতেও এই বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতারক চক্রের সবাই সরকারি চাকরিজীবী। এর পেছনে আরও কারা রয়েছে, তার কিছু তালিকা পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া আসামিদের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড পেলে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।

সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব ফারহান বলেন, ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট শেরেবাংলা নগর থানায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের তৎকালীন ডিজি সই জাল করে নিয়োগ সুপারিশের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার  তদন্তভার পায় দুদক। পরে মামলাটি তদন্ত করতে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগের কাছে পাঠায় দুদক।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর