‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে গেছে’
১৩ আগস্ট ২০১৮ ১৯:২৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া একটু কঠিন হয়ে গেছে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড প্রচলিত থাকলেও কানাডায় তা নেই। এজন্য কানাডার সাথে আলোচনা চলছে কিভাবে তাদের ফিরিয়ে আনা যায়। আমাদের অনেক পন্থা অবলম্বন করতে হচ্ছে।’
সোমবার (১৩ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
খুনিদের ফিরিয়ে আনতে কত সময় লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো সময় নির্ধারণ করে দেবো না। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এটা খুব কঠিন হয়ে গেছে এখন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এতোটা নয়, তবে বেশি কঠিন হয়ে গেছে কানাডায় থাকা খুনিকে ফিরিয়ে আনতে। সেজন্য আমরা আলোচনা ও আইনগত পন্থাসহ বেশকিছু পন্থা অবলম্বন করছি। তবে তাদের কাছে থেকে আমরা নেগেটিভ কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। তারা আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছেন। ফলে আমরা দুই দেশ সেদিকেই এগোচ্ছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর চার খুনিকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা যদি এসব তথ্য প্রচার করে দেই তাহলে তাদের অবস্থান তারা পরিবর্তন করবে। সেক্ষেত্রে আমরা যে তথ্যের ভিত্তিতে এগুচ্ছি সেই তথ্যের ভিত্তি আর সঠিক থাকবে না। আমি মনে করি যখন তাদেরকে পরিস্কারভাবে তাদেরকে টিলডাউন করতে পারবো তখনই আপনারা এ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে ভালো হয়। এর বাইরে আমি এখন আর কিছু বলতে চাই না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে বাকি যে দুইজনের কথা বলছেন তাদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনার আলাপ আলোচনা চলছে। এক্ষেত্রে আদালতের আশ্রয় নেব বলে আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেইভাবে কাজও এগুচ্ছো। বিএনপি সরকার তাদের ফিরিয়ে আনতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারা যদি পদক্ষেপ নিত তাহলে আমাদের আর এতো বেগ পেতে হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করি। ততোদিনে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের জন্য আইনগতভাবে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেছেন। এজন্য আবারও আমাদেরকে নতুন করে আইনি পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।’
আমরা মনে করি তাকে ফিরিয়ে আনতে আলাপ আলোচনা যেটা চলছে সেটা ফলপ্রসু হবে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তবে এর জন্য আমি সময় বেঁধে দিতে পারবো না। কারণ আপনারা জানেন সেদেশে নতুন প্রশাসন এসেছে। তারা তাদের প্রশাসনিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে যেভাবে আমরা আলোচনা করে যাচ্ছি তাতে আমার মনে হয় খুব সম্ভব আমরা একটা অগ্রগতি পেয়ে যাবো।’
‘আর খুনি নূর চৌধুরির বিষয়ে যেটা বলেছেন সেটা হচ্ছে কানাডায় একটি আইন আছে সেটা হলো যদি কোনো দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তাহলে সে দেশের কোনো আসামিকে তারা ফেরত দেন না। সেজন্য আমরা একদিকে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি অপরদিকে সেদেশের সরকারকে আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি যে তার অপরাধ কতটা গুরুতর। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও কাজ করছেন। তবে যেহেতু তাদের দেশে একটি আইন আছে সেই আইন বহাল রেখেই তারা কিভাবে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারে সেই প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এখন আলোচনা করছি। আর যেহেতু তারা আলোচনা করতে রাজি হয়েছেন তাই আমরা আশাবাদী’, তাকে ফেরত পাওয়ার বিষয়ে যোগ করেন মন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে প্রতিটি পদক্ষেপের বিষয়ে সাংবাদিকেদের যে জানিয়ে এগিয়ে যাবো তা নয়। কারণ আমরা তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই বিস্তারিত বলতে পারবো। এর আগেও হয়তো বলা হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা। তবে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। ফলে আমরা যখনই কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো তখই আমরা জনগণকে বলতে পারবো।’
আরও পড়ুন: কারাগারে ঈদ কাটতে পারে ২২ শিক্ষার্থীর
সারাবাংলা/এইচএ/এমও