চট্টগ্রামের ৪৩টি বাড়ি নিয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল
১৩ আগস্ট ২০১৮ ২১:০৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: চট্টগ্রামের ৪৩টি পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ে সাড়ে তিনবছর আগের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ভবন, কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়, শহীদ ও যুদ্ধাহত ১০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামে এসব ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
সোমবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতের এ রায়ের ফলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রায় এক হাজার কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ রক্ষা পেলো বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। একইসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দপ্রাপ্তদের এই সম্পদ ভোগ করার ক্ষেত্রেও বাধা কাটলো।
এর আগে, এক রিট আবেদনে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট সরকারের বরাদ্দ বাতিল করে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’র অনুকূলে রায় দেন। এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরউদ্দিনের করা এক রিট আবেদন হাইকোর্ট ওই রায় দিয়েছিলেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার ও বরাদ্দ পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের করা এক রিভিউ আবেদনে আজ হাইকোর্ট আগের রায় বাতিল করে নতুন করে রায় দিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। রিট আবেদনকারীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী ও রিয়াদ হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, অবাঙ্গালী পাকিস্তানীদের নিয়ে ১৯৫১ সালে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যায়। এরপর সমিতির সদস্যদের নামে থাকা ৪৩টি বাড়ি সরকার ১৯৮৬ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। এরপর সেসব বাড়ি সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শহীদ ও যুদ্ধাহত ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অনুকুলে বরাদ্দ দেয়।
পরবর্তীতে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আ জ ম নাছিরউদ্দিন সরকারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের রায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টরা আপিল বিভাগে যায়। আপিল বিভাগ তাদের আবেদন (২০১৬ সালে করা রিভিউ আবেদন) নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন। এরপর আবার বিষয়টি হাইকোর্টে আসে। হাইকোর্ট ওই রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ রায় দেন।
সারাবাংলা/এজেডকে/এমও