মৌলভীবাজারের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা
১৪ আগস্ট ২০১৮ ১৪:০৮
।। হৃদয় দেবনাথ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
মৌলভীবাজার: পর্যটনের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের বেশিরভাগ রাস্তার বেহাল দশা দীর্ঘদিন ধরে। মৌলভীবাজার সদর, শমশেরনগর, চাতলাপুর রাস্তা খানা- খন্দে ভরা বলে শহর থেকে গাড়ি চালক যেতে চাননা। আর যাত্রীদের অনুরোধে গেলেও হাঁকান অনাকাঙ্ক্ষিত ভাড়া। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স যে সঠিক সময় পৌঁছাবে সেটার ও নিশ্চয়তা নেই। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, ভাঙা রাস্তার কারণে গাড়িগুলো বিকল হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, কুলাউড়ার চাতলাপুর চেকপোস্ট থেকে জেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সড়কটি যাতায়াত ও মালামাল পরিবহণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেলা সদরের সাথে সংযোগ রক্ষাকারী অন্যতম এ সড়কটির এই করুণ দশায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। রাস্তা খারাপ থাকার কারণে বেড়াতে আসা পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছেন। রাস্তায় গাড়ি বিকল হয়ে চাতলা শুল্ক স্থলবন্দরের পণ্য ও মালামাল আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে।
সড়ক পথে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর থেকে মৌলভীবাজার জেলা সদরের ২০ কিলোমিটার সড়কের যাতাযাতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শমশেরনগর মোকামবাজার, মরাজানেরপার, রাধানগর, রামপুর, মুন্সীবাজার, বাবুরবাজার, চৈত্রঘাট, জয়কালি মন্দির, শ্যামেরকোনা বাজার, লঙ্গুরপার, শিমুলতলাসহ সড়কের অধিকাংশ স্থানেই গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কার না করায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি বন্যায় সড়কের শরীফপুর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বড় বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙা রাস্তা মেরামতের বিষয়ে কর্তৃপক্ষে কোন উদ্যোগ নেয়নি।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মৌরি খান জানান, সড়কের এই বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের কেউ এই রাস্তা মেরামতে এগিয়ে আসছে না। রাস্তার বেহল দশার কারণে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে সঠিক সময়ে আসা-যাওয়া করতে পারছি না। অনেক সময় রাস্তায় গাড়ি পাওয়া যায়না। আবার গাড়ির চালকরা বাধ্য হয়েই কয়েকগুন ভাড়া আদায় করেন।
শমসের নগরের স্থানীয় চিকিৎসক রাজ কুমার সেন জানান, চিকিৎসক হওয়ার সুবাধে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় রোগী দেখতে যেতে হয়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে অনেক সময় ইমার্জেন্সি রোগী দেখতে অসুবিধা হয়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে জনসাধারণের চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়বে। বেহাল এই সড়ক দিয়ে যানবাহনগুলিও প্রতিদিন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
সিএনজি চালক সানী জানান, ভাঙা রাস্তায় অনেক সময় সিএনজি অকেজো হয়ে যায়। গাড়ির এক্সেল ভেঙে রাস্তায় পড়ে থাকতে হয়। পাঁচশ টাকা ভাড়ার জন্য গাড়ির ক্ষতি হয় এক হাজার টাকা। অনেক সময় এই রাস্তায় যেতে চাইনা কিন্তু যাত্রীদের অনুরোধে যেতে বাধ্য হই।
ঘুরতে আসা পর্যটক সুমন সেন গুপ্ত জানান, পর্যটন নগরীর রাস্তা-ঘাটের এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুতই এসব রাস্তাঘাট সংস্কার করা না হলে মৌলভীবাজার জেলায় পর্যটন ধস নামবে।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ সারাবাংলাকে বলেন, আপাতত গাড়িতে করে বালু,পাথর নিয়ে সড়কে গর্ত ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া শমশেরনগর-মৌলভীবাজার সড়কের কাজের জন্য শিগগিরই দরপত্র আহবান করা হবে। আশা করি এ সমস্যা বেশি দিন থাকবে না। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
সারাবাংলা/এমএইচ