Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আফগানিস্তানে তালিবান হামলায় ৪৪ সেনা-পুলিশ নিহত


১৫ আগস্ট ২০১৮ ১৯:২৩

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বাগলানে একটি সামরিক চৌকিতে তালিবানের হামলায় কমপক্ষে ৯ পুলিশ ও ৩৫ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১৫ আগস্ট) সকালের দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এই হামলার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।

বাগলান প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান মোহাম্মাদ সফদার মোহসেনি বলেন, বাগলান-ই-মারকাজি ডিস্ট্রিক্টে ওই সামরিক চৌকিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তালিবান সদস্যরা। তবে এ বিষয়ে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

এদিকে, বুধবার দক্ষিণ আফগানিস্তানের জাবুল প্রদেশেও পুলিশের এক নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়েছে তালিবান। প্রাদেশিক পুলিশপ্রধান মুস্তাফা মায়ার জানিয়েছেন, এই হামলায় চার পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিন পুলিশ কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় হামলাকারীদের সাত জন নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে, সোমবারও ফারিয়াব প্রদেশে এক সামরিক ঘাঁটিতে তালিবানের হামলায় ১৭ সৈনিক নিহত হন। ওই হামলায় আরও ১৯ জন আহত হন।

গত কয়েকদিন থেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে তালিবান সদস্যদের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ চলে আসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংঘর্ষ ঘটেছে গাজনিতে। এই শহরটিতেই তালিবান সবচেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে। ধারাবাহিক এসব সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি হতাহত হয়েছে। এতে করে শহরের হাসপাতালগুলোতে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

গজনির বাসিন্দারা বলছেন, তাদের অনেকেই এখন নিজ নিজ বাড়ির বেজমেন্টে অবস্থান করছেন। হাসান সাফারি নামে এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, তালিবান ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ যেখানে হচ্ছিল, ঠিক সেখানেই আমার বাসা। আমরা ছিলাম সংঘর্ষের মধ্যে। তালিবানরা তাদের জন্য খাবার ও চা দিতে আমাদের অনেককে বাধ্য করেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। দুই দিন হলো আমাদের আর কোনো খাবার ও পানীয় অবশিষ্ট নেই। প্রতিনিয়ত বোমা ও গোলাগুলির শব্দে সবাই কাঁদছে।

এদিকে, চলমান এই সংঘর্ষে গজনির পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই শহরের কেন্দ্রীয় পানি সরবরাহ লাইন বন্ধ হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি শহরটিতে পানি ও বৈদ্যুতিক জেনারেটর সরবরাহ করছে।

তবে প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র আরিফ নূরি বুধবার বলেন, শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। যদিও জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, সাম্প্রতিক এসব সংঘর্ষের কারণে ‘চরম মানবেতর’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি তাদামিচি ইয়ামামতো বুধবার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গজনির পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। জানা গেছে, ১১০ জন থেকে দেড়শ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন এই শহরে। বিশ্বস্ত সূত্রগুলো বলছে, হতাহতদের ভিড়ে শহরের হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে আফগানিস্তানের বেশকিছু জেলা দখলে নিয়েছে তালিবান। গত কিছুদিন হলো প্রায় প্রতিদিনই তারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে।

সারাবাংলা/টিআর

আফগানিস্তান তালিবান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর