Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাঁপর আর লোহা পেটানোর শব্দে মুখর মাগুরার কামারপল্লি


১৬ আগস্ট ২০১৮ ০৮:৫৮

।। আরাফাত হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

মাগুরা : কেউ আসছেন পুরনো ছুরি-কাঁচিতে শান দিতে। কেউ আসছেন নতুন কাজের অর্ডার নিয়ে। পশু কোরবানির বড় ছুরি, ছোট ছুরি, চাপাতি, বটির চাহিদা এখন আকাশ ছুঁয়েছে। সময় স্বল্পতার কারণে নতুন কাজের বায়না পর্যন্ত নিচ্ছেন না কামাররা। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন লোহার কামাররা।

জেলার কামারপল্লিতে এখন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে হাপরের হুস-হাস শব্দ আর হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটানোর কাজ। সারাবছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন দম ফেলানোর ফুসরত পাচ্ছেন না তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা সদরের আবালপুর, রামনগর, কাটাখালিসহ বিভিন্ন বাজারে কামারশালায় কামাররা বিরতিহীনভাবে কাজ করছেন। তাদের ব্যস্ততার কারণে দা, কাঁচি নিড়াণি, ট্যাঙ্গীসহ অন্যান্য লোহার জিনিস তৈরি আপাতত তারা বন্ধ রেখেছে। কোনো কোনো কামারশালায় নতুন অর্ডার নেওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে। বছরের অন্য সময় তাদের কাজের তেমন চাপ থাকে না। তবে ঈদকে সামনে রেখে কাজের চাপ সামলাতে অনেক স্থানে দেখা মিলছে মৌসুমি কামারেরও।

ঈদে ছুরি, চাপাতি, বটির চাহিদার প্রতিফলন দেখা গেছে বাজারে। গত কিছুদিন হলো নতুন ছুরি, চাপাতি আর বটির বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। আকার ও ওজনভেদে এগুলোর দাম একেক রকম। এর মধ্যে দা দেড়শ টাকা থেকে পাঁচশ টাকা, ছোট ছুরি ৫০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা, বড় ছুরি আড়াইশ টাকা থেকে তিনশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়লা আর লোহা-ইস্পাতের দাম বেড়ে যাওয়ায় এসব পণ্যের দাম এ বছর একটু বেশি বলেই জানালেন ব্যবসায়ীরা।

মাগুরা কাটাখালির বিপ্লব কামার জানান, প্রতিবছর এই একটি সময়েই আমাদের একটু ব্যস্ত সময় কাটে। সারাবছর তেমন কাজের চাপ থাকে না বলে এই মৌসুমের আয়ের ওপরেই সারাবছর নির্ভর করতে হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ছোট ছুরি থেকে শুরু করে বড় ছুরি ও দাসায় শান দেওয়ার জন্য ৩০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া বাজারে বিক্রির জন্য নতুন ছুরি, বটিও তৈরি করা হয়।

কামার শিবুপ্রসাদ ও হারাধন কর্মকার জানান, একসময় কামারদের যে কদর ছিল, এখন তা আর নেই। মেশিনের সাহায্যে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষ আকর্ষণ হারাচ্ছে। হয়তো একসময় এই পেশা আর থাকবে না। তবে কোরবানির ঈদের সময় আমরা একটু আশাবাদী হই। এ সময় আমাদের রোজগার ভালো হয়।

জেলা বণিক সমিতির আহ্বায়ক মুন্সি হুমায়ুন কবির রাজা জানান, মাগুরার লোহার কামারদের সুনাম ও হাতযশ দীর্ঘদিনের। তাই মাগুরার বাইরের মানুষও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বানাতে চলে আসেন। অনেকেই নতুন অস্ত্র দিয়ে পশু কোরবানি করতে পছন্দ করেন। তাই প্রতিবছরের এই মৌসুমে ভিড় বাড়ে জেলার কামারপল্লিতে।

সারাবাংলা/এমএইচ/টিআর

কামারপল্লী কোরবানীর ঈদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর