রাখাইন পরামর্শক প্যানেলের চূড়ান্ত প্রতিবেদন
১৭ আগস্ট ২০১৮ ১৮:৫৭
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
কফি আনানের নেতৃত্বাধীন আনান কমিশনের সুপারিশের আলোকে রাখাইনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে গঠন করা হয় মিয়ানমার সরকারের আন্তর্জাতিক প্যানেল- কমিটি ফর ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য রিকোমেনডেশন অন রাখাইন স্টেট। রাখাইন পরামর্শক এই প্যানেলটি বৃহস্পতিবার(১৭ আগস্ট) তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে ১২টি নির্দেশনা যুক্ত করা হয়েছে যাতে আনান কমিশনের সুপারিশ অনুসারে সংকট সমাধান করা যায়।
এই প্যানেলের প্রধান থাইল্যান্ডের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী সুরাকিয়ার্ত সাথিরাথাই বলেন, মিয়ানমার সরকার তাদের সুপারিশগুলো ইতিবাচকভাবে দেখেছেন।
প্যানেল সদস্য ইউ উইন মারা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সুপারিশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মিয়ানমার সরকার ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে। উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে একটি স্বাধীন কমিশনের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে বলছে, দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতা বিরোধী কাজের যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে সেগুলোর সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। মিয়ানমার আন্তর্জাতিক চাপ না মানলেও কমিশন তদন্ত কাজ পরিচালনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন।
ইউ উইন মারা বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর প্রমাণ করে যে সুচি সরকার পরামর্শ গ্রহণে সক্ষম। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যম ও প্রতিবেদককে নাজেহাল না করা ও তথ্য সংগ্রহ করতে দেওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়া মিয়ানমার সরকারকে আক্রান্ত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবার প্রতিও দৃষ্টি দিতে আহ্বান জানান।
রাখাইন পরামর্শক এই প্যানেলটির কার্যকারিতা নিয়ে এর আগে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ আলোচনা হয়েছে। ৫ সদস্যের প্যানেল থেকে মার্কিন রাজনীতিবিদ বিল রিচার্ডসন, থাই কূটনীতিক কবসাক চুটিকুল পদত্যাগ করলে ধারণা করা হচ্ছিলো মিয়ানমারের সরকারের কারণে কমিটির বিদেশি সদস্যরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। তবে অবশেষে পরামর্শক প্যানেলটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ মিয়ানমার সরকারের কাছে দাখিল করলো।
উল্লেখ্য, রাখাইন রাজ্যের বৌদ্ধ ও মুসলিমদের জাতিগত বিরোধ মেটানো ও দীর্ঘ মেয়াদী শান্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে দেশটির নেত্রী অং সাং সুচি ২০১৬ সালে কফি আনানকে প্রধান করে ‘আনান কমিশন’ গঠন করেন। কমিশন ঐ অঞ্চলের সংকট সমাধানে বিভিন্ন সুপারিশ প্রস্তাব করে। কমিটিকে সাহায্য করার জন্য গঠন করা হয় রাখাইন পরামর্শক প্যানেলটি।
সারাবাংলা/এনএইচ
আরও পড়ুন,
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে ইচ্ছুক নয় মিয়ানমার