ঈদযাত্রায় ট্রেনের শিডিউল এখনও ‘ঠিকঠাক’
১৮ আগস্ট ২০১৮ ১৪:৩৫
।। আবদুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঘরমুখী মানুষের যাত্রার শুরুটা হয়েছে স্বস্তির। এখন পর্যন্ত মহাসড়কে যানজটের তীব্রতা যেমন তৈরি হয়নি, তেমনি কমলাপুর রেল স্টেশন থেকেও ঠিকঠাক সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ ট্রেন।
শনিবার (১৮ আগস্ট) সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়েও দেখা গেল তেমন চিত্র। ঈদযাত্রায় সামিল হতে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করছেন স্টেশনে। বেশিরভাগ ট্রেন শিডিউল অনুযায়ী ছেড়ে যাওয়ায় এই প্রচণ্ড গরমেও তাদের চোখেমুখে খানিকটা স্বস্তির আভাস। তবে যে কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে যা ছাড়ছে, সেই ট্রেনগুলোর যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা হতাশ।
ঈদযাত্রায় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটে ট্রেনে ভরসা রাখেন যাত্রীদের বড় একটি অংশ। তবে সেই ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয়ের কারণে গত কয়েকটি ঈদে সেই ট্রেন যাত্রাও হয়ে উঠেছে বিড়ম্বনার প্রতিশব্দ। শুক্রবার (১৭ আগস্ট) থেকে ঈদযাত্রা শুরু করা ট্রেন নিয়ে সেই বিড়ম্বনার মুখে অবশ্য এখনও পড়তে হয়নি বেশি যাত্রীকে।
শনিবার কমলাপুর রেল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে অধিকাংশ ট্রেনই যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। তবে লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেসের ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি সকাল ৯টা ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি কমলাপুর ছেড়ে যায় দুপুর পৌনে ১২টায়।
সোয়া ১১টার দিকে হয় এই ট্রেনের যাত্রী তালহার সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে জানান, সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জ থেকে কমলাপুর এসেছেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। ৯টায় ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি যথাসময়ে না ছাড়ায় গরমে অতীষ্ঠ হয়ে উঠছেন তারা। ছোট মেয়েকে নিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আর ট্রেন ছাড়ার সংকেতের অপেক্ষা করছেন তালহা।
লালমনি এক্সপ্রেস ছাড়াও এদিন দুপুর পর্যন্ত আরও তিনটি ট্রেন যথাসময়ে কমলাপুর রেল স্টেশন ছেড়ে যেতে পারেনি। তবে সকাল থেকে বাকি ২৫টি ট্রেন সময়মতোই ছেড়ে গেছে নিজ নিজ গন্তব্যে।
স্টেশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার লালমনি এক্সপ্রেসই প্রথম ট্রেন হিসেবে শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। ট্রেনটি ঢাকা থেকে সাড়ে পাঁচশ কিলোমিটার যাত্রা করে। তার মধ্যে ২২টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। কিন্তু ঈদের সময় যাত্রীদের ভিড় থাকায় প্রতিটি স্টেশনিই কিছুটা বাড়তি সময় দিতে হয়। যার ফলে অনেক ট্রিপেই ট্রেনটি সময়তো পৌঁছাতে এবং ফিরে আসতে পারে না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বিকল্প পদ্ধতি চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান তারা।
ট্রেন যাত্রায় তেমন কোনো শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি উল্লেখ করে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মো. সাখাওয়াত হোসেন খান সারাবাংলাকে জানান, চারটি ট্রেন ছাড়া সবগুলো ট্রেন এখন পর্যন্ত যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। নিরাপত্তার বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এদিকে, ট্রেনে ঈদযাত্রার চিত্র দেখতে কমলাপুর রেল স্টেশনে হাজির হয়েছিলেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন। তিনি জানান, ঈদ যাত্রায় ৬৮টি ট্রেন শনিবার ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৯টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ২৫টি ট্রেন সময়মতো ছেড়ে গেছে। আর চারটি ট্রেনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
সচিব বলেন, ‘ট্রেনের বিলম্ব হওয়ার কারণ নিয়ে আমরা আজ (শনিবার) আলোচনায় বসেছিলাম। আগামীকালের ট্রেনগুলো যেন যথাসময়ে ছেড়ে যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে কিছু কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। একইসঙ্গে নিরাপত্তা বিবেচনায় ট্রেনের ছাদে যেন কোনো যাত্রী না ওঠে, সেজন্যও কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি।’ যদিও কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে অনেক যাত্রীকেই ছাদে চড়তে দেখা গেছে।
কমলাপুর ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা রেল স্টেশনের কী অবস্থা, সেটিও কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান রেলওয়ে সচিব।
আরও পড়ুন-
ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে থেমে থেমে চলছে গাড়ি
উত্তরবঙ্গের টিকেট নেই, চট্টগ্রামের পথে ভোগান্তির শঙ্কা
মহাখালীতে যাত্রীর চাপ কম, বাড়তি টাকায় মিলছে বাসের টিকেট
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর