Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘এমপির ইন্ধনে’ ধর্ষণ চেষ্টার আসামি ৬৬ বছর বয়সী পৌর মেয়র


১৮ আগস্ট ২০১৮ ২১:৩৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের বাঁশখালীর দুই আওয়ামী লীগ নেতা। একজন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, আরেকজন পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী। দুজনের বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ৬৬ বছর বয়সী সেলিমুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছে, যাতে সংসদ সদস্যের ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী।

গত ডিসেম্বরে বিজয় মেলায় সংসদ সদস্যের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতাদের অতিথি করা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হয় বলে জানান সেলিমুল, যিনি সংসদ সদস্যের সমর্থনে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।

সেলিমুল হক চৌধুরী বলেন, গত ১৭ থেকে ২৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়। মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম আমি। প্রথমদিন প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয় মেলার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এরপর একেকদিন জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অতিথি করি। একদিন আবদুল্লাহ কবির লিটনকেও (সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী) অতিথি করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের অতিথি করায় ক্ষিপ্ত হন সংসদ সদস্য।

এরপর থেকে সংসদ সদস্য তাকে হেয় করতে উঠেপড়ে লাগেন বলে অভিযোগ সেলিমুলের। গত ৪ জানুয়ারি সরকারের চতুর্থ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে সেলিমুলকে ‘চোর সম্বোধন করে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য।

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য তার অনুসারী লোকজন দিয়ে তাকে নাজেহাল করেন বলেও অভিযোগ করেন পৌর মেয়র সেলিমুল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সংসদ সদস্য প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে অসদাচরণ করেন। উনি আমাকে পৌরবাসীর কাছে হেয় করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।

সেলিমুল বলেন, ‘গত ৩ জুন একজন নারী বাদী হয়ে আদালতে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় ঘটনার তারিখ হিসেবে ২৮ মে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ সেদিন আমি ঢাকার নিউ ইস্কাটনে ছিলাম। সেদিন ১২ রমজান ছিল। যিনি মামলা করেছেন তাকে কখনো আমি দেখিনি। এরপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যখন আমি আমেরিকা যাই তখন মামলার বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশে অবস্থানকালে যেন আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মামলার বাদি কারমিন আক্তারের বাড়ি সাংসদের বাড়ির কাছেই জালিয়াঘাটায়। মামলায় জালিয়াঘাটার বাসিন্দাদের সাক্ষী করা হয়েছে। আর ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে পৌর সদর। প্রশ্ন হল, তারা ঘটনার সময় সেখানে কীভাবে গেল? এতেই প্রমাণিত হয় সাংসদের ইন্ধনে এ মিথ্যা মামলা হয়েছে। ওই নারী এবং তার পরিবারের সদস্যরা এর আগেও বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এরকম মামলা করেছেন।’

ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। এভাবে আমাকে হেয় করার বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানাবো।’

সেলিমুল বলেন- দুঃখ লাগে আমার। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আমার বয়স এখন ৬৬ বছর। সন্তানরা বড় হয়েছে। জীবনের শেষ সময়ে এসে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, সাজানো একটি মামলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্যের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরেন পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাঁশখালী পৌরসভার কাউন্সিলর দীলিপ চক্রবর্তী, মো. দেলোয়ার হোসেন, নজরুল কবির সিকদার, মো. হারুন, জামসেদ আলম, বাবলা কুমার দাশ, রুজিনা আক্তার, রুজিয়া সুলতানা ও নার্গিস আক্তার।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

ধর্ষণ চেষ্টার আসামি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর