মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর মিনা, কাল হজ
১৯ আগস্ট ২০১৮ ১১:৪৫
।। মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, মক্কা থেকে।।
নবী-রাসুলদের স্মৃতিধন্য পবিত্র নগরী মক্কার ঐতিহাসিক মিনা প্রান্তর পরিণত হয়েছে তাবুর শহরে। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে উন্নত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রশস্ত সাদা তাবুগুলো মুখরিত সারাবিশ্ব থেকে আসা ও স্থানীয় প্রায় ৩০ লাখ মুসুল্লির তালবিয়া ধ্বনিতে। ০৮ জিলহজ সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ার আগে যেকোনো সময় মক্কা থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় পৌঁছানো এবং ৯ জিলহজ সূর্যোদয় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে জোহর থেকে ফজর অব্দি মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হজের গুরুত্বপূণ সুন্নত।
তবে পথের যানজট থেকে বাঁচতে শনিবার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকেই মুসুল্লীদের মিনামুখী যাত্রা শুরু হয়। ৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর থেকে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা হজের সবচেয়ে জরুরি আমল। এখানেও ভিড় এবং যানজট এড়াতে রোববার (১৯ আগস্ট) রাত থেকেই লাখ লাখ কাফেলা ছুটবে মক্কা থেকে বিশ কিলোমিটার দূরের ঐতিহাসিক আরাফা অভিমুখে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট এক লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ মানুষ হজ পালনের উদ্দেশে মক্কায় গেছেন। তবে এদের মধ্যে মারা গেছেন ৫১ জন হজযাত্রী।
মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় আল্লাহর অতিথিদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা এবং নির্বিঘ্নে ইবাদত ও চলাচল নিশ্চিত করতে সৌদি সরকার গ্রহণ করেছে নজিরবিহীন ব্যবস্থা। শুধু মিনায় নিযুক্ত করা হয়েছে ১৮ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্য। পুরো এলাকা রয়েছে সিসি ক্যামেরার আওতায়। আকাশে থাকছে হেলিকপ্টারের বিশেষ টহল। মিনার তাবুতে প্রত্যেকের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে ওয়ানটাইম বালিশ ও চাদর।
স্থানীয় দৈনিক মক্কাকে হজমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ বানতান জানিয়েছেন, এবার মিনায় অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা সর্বাধুনিক ৪৮ হাজার নতুন এসি লাগানো হয়েছে, পুরো আরাফার তাবুগুলোতে লাগানো হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র আর অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা। প্রতিটি মুআল্লিমের কেন্দ্রে বানানো হয়েছে একাধিক চিকিৎসা কেন্দ্র। এ ছাড়া স্থানীয় ও বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ২০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা রয়েছেন মুসুল্লিদের সার্বক্ষণিক সেবায়।
সৌদি গণমাধ্যমমন্ত্রী ড. আওয়াদ আল আওয়াদ শুক্রবার (১৭ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, প্রায় ৮০০ বিদেশি ও এক হাজার স্থানীয় সাংবাদিককে সরকার কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করছে। সর্বক্ষণিক তথ্য সরবরাহে ৪০টি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বের ১৫১টি চ্যানেল ও ২৭টি রেডিও হজের আনুষ্ঠানিকতা সরাসরি সম্প্রচার করবে। শুক্রবার বিকেলে সরেজমিন হজের প্রস্তুতি পরিদর্শন করে গেছেন মক্কার উপগভর্নর আমির আবদুল্লাহ বিন বন্দর। এর আগে গত সপ্তাহে প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন মক্কার গভর্নর ও বাদশার উপদেষ্টা খালেদ বিন ফয়সল।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৯ আগস্ট) আরাফা ও মুজদালিফায় অবস্থানের পর ১০ জিলহজ বড় জামারায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ ও কুরবানি করে মাথা নেড়ে করে হাজিরা প্রাথমিক হালাল হবেন। ১৩ জিলহজ শেষ হবে হজের কার্যক্রম।
সারাবাংলা/পিএম/এসএমএন