শহরের প্রবেশমুখে ময়লার ভাগাড়, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
১৯ আগস্ট ২০১৮ ১২:৩৭
।। মুহাম্মদ আরিফুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
ফেনী: ফেনী শহরের প্রবেশমুখে দেওয়ানগঞ্জে ময়লার ভাগাড়। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে উৎকট পচা-দুর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে। ফলে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ এ মারাত্মক সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের বাণী শোনালেও দীর্ঘদিনেও তা সমাধান না হওয়ায় দিনে দিনে এলাকাবাসী ও নাগরিকদের অসন্তোষ বাড়ছে। এ পথ দিয়ে প্রতিদিন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও হাজারো জনতা যাতায়াত করে। ভাগাড়ের চতুর্দিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে আশপাশ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ফেনী শহরের ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের ফেনীর দেওয়ানগঞ্জে সড়কের দুই (এক কিলোমিটার) পাশেই শহরের গৃহস্থলি বর্জ্য অপরিকল্পিত স্তুপ করে রাখায় বিশাল ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
বিগত ১০-১২ বছর আগ থেকে পৌরসভার সিদ্ধান্তক্রমে ফেনী পৌরসভার দেওয়ানগঞ্জ এলাকার পতিত জায়গাটি ভরাট করার লক্ষ্যে পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছিল। এতে করে অসহনীয় উৎকট দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। অনেকটা অসহায় হয়ে ওই এলাকায় বহুতল ভবন করেও বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র জীবনযাপন করছে কয়েকটি পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিকুর রহমান জানান, ময়লাগুলো নির্ধারিত স্থানে না ফেলে পুরো দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফেলছে পৌরসভার লোকজন। যারফলে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষ বহুতল ভবন নির্মাণ করেও বাড়ি-ঘরে উঠতে পারছে না।
কলেজছাত্রী মায়মুনা আক্তার জানান, ‘এই পথ দিয়ে প্রতিদিন যাওয়া আসা করতে হয় আমাদের। এই দুর্গন্ধের মধ্যে চলতে গিয়ে নানান ধরনের চর্ম এলার্জিসহ ও শ্বাস কষ্ট করতে হয় আমাদের।’
আবুল কালাম নামে অপর এক বাসিন্দা জানান, ‘আমরা শহরতলী বসবাস করেও নরকে বাস করছি। ফেনী শহরের বর্জ্য, বিশেষ করে মুরগির পঁচা গন্ধে পেটের ভেতর থেকে নাড়ি-বুড়ি বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। বাপ-দাদার বাড়ি সে জন্য ছেড়ে যেতেও পারছি না।’
ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশ্রাফুল আলম গিটার জানান, জলবায়ু প্রকল্পের আওতায় ফেনী পৌরসভার সুলতানপুরের বিটপিকা এলাকায় প্রতিদিনকার সংগৃহীত ময়লা-আবর্জনা থেকে সার উৎপাদনের জন্য একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নাগরিকদের দুর্ভোগ কমে যাবে। ইতোমধ্যে দেওয়ানগঞ্জ এলাকা থেকে বেশকিছু পরিমাণ ময়লা সরিয়ে বিটপিকা এলাকায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ দিকে ফেনী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার জানান, এই ময়লার কারণে পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি, মাটিতে তৈরি হচ্ছে অ্যামোনিয়া গ্যাস। যার ফলে ধীরে ধীরে গাছগুলো যেভাবে মারা যাচ্ছে ঠিক এই পথে চলতে গিয়ে মানুষও রোগাক্রান্ত হচ্ছে। তিনি ময়লাগুলোকে পৌর কর্তৃপক্ষকে রিসাইক্লিনিং করার অনুরোধ করেছেন।
সারাবাংলা/এমএইচ
আরও পড়ুন,
বসবাসের অযোগ্যতায় ঢাকা দ্বিতীয়