যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব মিটলো বি. চৌধুরী-ড. কামালের
১৯ আগস্ট ২০১৮ ২৩:৩৯
।। আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দেশের দুই প্রবীণ রাজনীতিবিদ সংবিধানের প্রণেতা ড. কামাল হোসেন ও সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে বিভেদ কম দিনের নয়। তাদের মধ্যেকার এই দ্বন্দ্বের কারণেই এতদিনেও যুক্তফ্রন্ট পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারেনি। তবে তাদের মধ্যেকার নেতৃত্বের সেই বিভেদ মিটে গেছে। বর্ষীয়ান এই দুই নেতা এখন এক মঞ্চ থেকে নেতৃত্ব দেবেন।
রোববার (১৯ আগস্ট) রাতে দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক তাদের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের নিরসন ঘটিয়েছে বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র। তারা বলছেন, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিকল্পধারা প্রেসিডেন্ট ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এখন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির দাবি নিয়ে ঈদের পরে এক মঞ্চ থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। শুধু তাই নয়, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মহাসমাবেশে অংশ নেবেন যুক্তফ্রন্টের নেতাকর্মীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্ব কে দেবেন— তা নিয়ে মতানৈক্য থাকার কারণেই ড. কামাল যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক করেননি। তবে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নানের বাসায় রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দীর্ঘ বৈঠকে সেই বিভেদ মিটে গেছে। ওই বৈঠকে বি চৌধুরী ছাড়াও যুক্তফ্রন্টের অন্যান্য নেতারা অংশ নেন।
এসব বিষয় নিয়ে গণফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন ড. কামাল হোসেন ও বি চৌধুরী এক মঞ্চে থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তারা একসঙ্গে রাজপথে থাকবেন। তারা দু’জনেই এসব বিষয়ে একমত হয়েছেন। তিনি জানান, গণফোরামও এখন থেকে যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত হলো।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচন দল-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করা; নির্বাচন কমিশনের সংস্কার, অর্থাৎ ‘বিতর্কিত’ হওয়া বর্তমান কমিশনের জায়গায় নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন; গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) সংস্কার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে মাজদার হোসেন মামলার রায় কার্যকর করার বিষয়ে সরকারকে চাপ তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে জনমত গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য ২২ সেপ্টেম্বর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মহাসমাবেশ থেকে নতুন করে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায় সফরের কর্মসূচি ঘোষণা করার বিষয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। যুক্তফ্রন্টের নেতারা সবাই এই ইস্যুতে একমত পোষণ করেন।
এদিকে, সারাদেশে মানুষের মধ্যে জনমত গড়তে সারাদেশে লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে এক লাখ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানানো হয় বৈঠকে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তাদের যুক্তফ্রন্টে জামায়াতে ইসলামী বাদে অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দল যুক্ত হতে চাইলে তাদের সুযোগ দেওয়া হবে। বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং বাম দলগুলোকে যুক্তফ্রন্টে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর