ঈদের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে ভিড় মসলার দোকানে
২০ আগস্ট ২০১৮ ০৯:০৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : কোরবানি ঈদে মসলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় মসলার দোকানগুলোতে তাই ভিড় সবচেয়ে বেশি। ঈদকে সামনে রেখে সব ধরনের মসলার দামও বেড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ। তবে খুচরা ও পাইকারি বাজারে মসলার দামে রয়েছে বেশ পার্থক্য। ক্রেতারা বলছেন, মসলার দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মশলার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারওয়ান বাজারের খুচরা বাজারে দেখা গেছে, জিরা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, দারচিনি ৩৪০ টাকা, এলাচি ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা , লবঙ্গ ১০০ টাকা, গোলমরিচ ৮০০ টাকা, কিচমিচ ৩৮০ থেকে ৪৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতা আব্দুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, কোনোটাতে হয়তো কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে, আবার কোনোটাতে ১০ টাকা কমেছে। সবমিলিয়ে দাম খুব একটা বাড়েনি। এলাচ বাদে অন্য সবগুলোর দাম প্রায় একই রয়েছে। আর বেচাকেনা অন্য সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি।
হাতিরঝিল আর্মি ক্যাম্পের শ্রমিক মো. শাহজাহান। পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। বাজার করতে এসেছিলেন কারওয়ান বাজারে। মসলা কেনাকাটার পর সারাবাংলাকে বলেন, ‘গরিব মানুষ। তারপরও তো কিছু কেনাকাটা করতে হয়। আর মসলার দাম তো এখন একটু বেশিই।’ ফার্মগেটের বাসিন্দা ফাতেমা আক্তারও বলেন, কোরবানি এলেই মসলার দাম বাড়ানো হয়। এখন মসলার দাম আগের চেয়ে বেশি। তবে মনিপুরী পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল বাকী (৪০) বললেন, মসলার বাজারে দাম রয়েছে আগের মতোই।
এদিকে, পাইকারি বাজারে জিরা কেজিতে ৩৪০ থেকে ৩৪৫ টাকা, দারচিনি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা, এলাচি ১৬৫০ থেকে ১৯৫০ টাকা, গোলমরিচ ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। একমাসের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম কেজিতে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
পাইকারি বিক্রেতা সেলিম আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, দুই মাস আগে যে এলাচ ১১শ টাকা ছিল, সেটা এখন ১৭০০ টাকা। আর ১৪শ টাকায় যা বিক্রি হতো, তা এখন ২০০০ টাকা।
এছাড়া, বাজারে কেজিতে আদার দাম বেড়েছে ২০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে বার্মিজ আদা ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন (রোববার) তা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর তিন দিন আগে চায়না আদা ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তার দাম ৯০ টাকা। অন্যদিকে, রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। এসব তথ্য জানান বিক্রেতা মো. কামরুল। বলেন, ঈদে বেচাকেনা খুব একটা বাড়েনি।
এদিকে, পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা ময়না বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৩৪ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, এখন তা ৩০ টাকায় নেমে এসেছে। আর দেশি পেঁয়াজ ৫২ টাকা পর্যন্ত উঠলেও এখন তার দাম ৫০ টাকা। এই বিক্রেতার মতে, ‘ঈদের পর পেঁয়াজের দাম আরও কমবে’— বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রভাবেই ক্রেতারা এখন পেঁয়াজ কেনা থেকে দূরে রয়েছেন। ফলে বাজারে পেয়াজের দাম কমেছে। এতে ঈদের আগে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে, খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা, ভারতীয় ৪০ টাকা, রসুন ৮০ টাকা ও আদা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মসলাজাতীয় পণ্যের মধ্যে ছোট এলাচ ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা কেজি, দারচিনি ৪০০ টাকা, জিরা ৪৮০ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ টাকা ও গোলমরিচ ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালী বউবাজারের খুচরা দোকানি মো. আলম সারাবাংলাকে বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে মসলার দাম এখন গড়ে অন্তত ২০ শতাংশ বেশি। বেচাকেনাও বেশ ভালো। মশলা জাতীয় পণ্যের বেচাকেনা বেড়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। সেখানে বাজার করতে আসা গৃহিণী সোহেলি বেগম ( ৩৫) সারাবাংলাকে বললেন, কোরবানি এলেই মসলার দাম বাড়ে। দাম বাড়তি হলেও কিনতে তো হবেই।
সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম