Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টুং টাং শব্দে বিরামহীন ব্যস্ততা লালমনিরহাট কামারপাড়ায়


২০ আগস্ট ২০১৮ ১০:৪৫

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

লালমনিরহাট : কোরবানি ঈদে পশু জবাইয়ের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে লালমনিরহাটের কামারদের ব্যস্ততা। হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা, বটি, ছুরি-চাপাতি।

কামাররা সকলেই এখন ব্যস্ত পুরোনো দা, ছুরি এবং বটিতে শান দিতে। কেউবা ব্যস্ত নতুন নতুন দা-ছুরি তৈরিতে। তাই দম ফেলার যেন সময় নেই তাদের। সারা বছর অনেকটা অলস সময় পার করা কামাররা ব্যস্ততার ভিড়ে এখন অতিরিক্ত দরদাম করে সময় নষ্ট করতেও আগ্রহী নন।

লালমনিরহাট সদরসহ ৫টি উপজেলায় বিভিন্ন কামারি দোকান ঘুরে দেখা যায়, কোরবানিদাতারা কোরবানির পশু কাটা ছেড়া করার জন্যে পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত সবকটি দা, ছুরি, বটি শান দেওয়ার জন্যে নিয়ে আসছে কামারদের কাছে। ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কামারদের বিরামহীন ব্যস্ততা।

লালমনিরহাট, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কামারের দোকানগুলোতে এখন ক্রেতাদের ভিড়।

কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার বাজারে গিয়ে অপেক্ষারত একজন ক্রেতাকে দেখে অপেক্ষার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, কয়েক দিন আগে একটা চাপাতি এবং বড় চাকু দিয়েছি কিন্তু সময় মত না হওয়ায় আজ ১ ঘণ্টা বসে থেকে তা তৈরি করে নিলাম। কামারদের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। পোড়া কয়লার গন্ধ আর হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দে তৈরি হচ্ছে চকচকে ধারালো দা, চাপাতি, ছুরি, বঁটিসহ নিমিষে মাংস কাটা-কোটার উপকরণ।

কামার দোকানগুলোতে কারিগরদের যেমন ব্যস্ততা বেড়েছে তেমনি বেচাবিক্রি করতে গিয়েও হাপিয়ে উঠছে বিক্রেতারা। কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা সাধারণত এ দুই ধরনের লোহা ব্যবহার করে এসব উপকরণ তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি।

বিজ্ঞাপন

আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম। লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৩০০ টাকা, নরমাল ১২০ টাকা, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ৫০ থেকে ১৫০, দা ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে শুরু, বটি ২০০ থেকে ৪০০, চাপাতি ৫০০ থেকে ডেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলার চাপারহাটের পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদির দোকানদার তরমুজ উদ্দিন জানান, বছরের ১১ মাসে তাদের ব্যবসা হয় এক রকম আর কোরবানির ঈদের আগের এক মাসে ব্যবসা হয় আরেক রকম। ঈদুল আজহা এলেই কামার দোকানিদের বেচাকেনা ও ব্যস্ততা বেড়ে যায়।

উপজেলার কাকিনা বাজরের ফারুক মিয়া এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ সময় কামারি জিনিস কেনা বা তৈরি করা মুশকিল, যেমন চড়া দাম তেমনি কামারদের ব্যস্ততা।

তুষভান্ডার বাজারে কামার রমানাথ কর্মকার জানান, বছরের বাকি সময়টার বেশির ভাগই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হয়। কোরবানি এলেই বেচাকেনা ও লোকজনের মরিচা পড়া দা, বটি, ছুরি ইত্যাদি সরঞ্জাম ধারালো করার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এ ছাড়াও কামার রনজিত মোহন্ত, অর্জুন কর্মকার ও সালাম একই কথা জানান।

সারাবাংলা/এনএএস/জেডএফ

কামারপাড়া কোরবানির ঈদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর