Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেহেরপুরে চামড়া বেচাকেনা নিয়ে সংশয়


২১ আগস্ট ২০১৮ ১৩:১৮

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

মেহেরপুর: চামড়া কেনাবেচা নিয়ে মেহেরপুরে চামড়া ব্যবসায়ী ও কোরবানির পশু মালিকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। দর পতন, চামড়ার মান নির্ধারণ ও গত বিক্রিত চামড়ার টাকা না পাওয়ায় দিশেহারা ব্যবসায়ীরা।

চামড়া ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর কোরবানির সময়ে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এবারো সমপরিমাণ পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রাণি সম্পদ অফিস। কিন্তু সরকার চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা গত বছরের চেয়ে বেশ কম।

জেলার বড় আকারের চামড়া ব্যবসায়ী তুহিন আহম্মেদ বলেন, গত বছরের চেয়ে চামড়ার দর কমানোয় কোরবানির পশু মালিকদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে আকিজ ও এপেক্স কোম্পানি থেকে চামড়ার মান শ্রেণি নির্ধারণ নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে। চামড়া ছাড়ানোর সময় ছুরির দাগ ও ফাটা চামড়া ক্রয় করবে না বলে ওই দু’টি কোম্পানির প্রতিনিধিরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। এই শর্ত মানতে হলে আমাদের ক্রয়কৃত চামড়ার শতকরা ২০ ভাগ বিক্রি হবে।

চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানান, মেহেরপুর জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা নাটেরসহ বিভিন্ন মোকামে চামড়া বিক্রি করে থাকেন। গত বছর যে চামড়া বিক্রি করা হয়েছিল তার অর্ধেক টাকাও এখনো পরিশোধ করেননি মোকামের আড়ৎদাররা। ফলে কোরবানির দিনে আমারা কিভাবে চামড়া ক্রয় হবে তা ভেবে অস্থির ব্যবসায়ীরা। পশু কোরবানির মালিকরা বাকিতে চামড়া বিক্রি করেন না। যেকোন ভাবেই তাদের টাকা দিতে হয়। তাই ঋণ ও সুদের টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

পশু কোরবানি ইচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মাংস তৈরির খরচ ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চামড়া বিক্রির অর্থ দেয়া হয়। এবছরে চামড়ার যে দর নির্ধারণ করা হয়েছে তাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

চামড়া ব্যবসায়ী সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রতি বছরই মৌসুমী চামড়া ক্রেতাদের কারণে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তারা বেশি দরে গ্রাম থেকে চামড়া ক্রয় করে থাকে। এক প্রকার সিন্ডিকেট তৈরি করে বেশি দরে চামড়া বিক্রির চেষ্টা করে থাকে। এতে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে অনেক সময় চামড়া ক্রয় করতে হয়।

চামড়া ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, একটি গরুর চামড়ায় ৫-৭ কেজি ও খাসির চামড়াতে ১-২ কেজি লবণ প্রয়োজন। প্রতি কেজি লবণের দাম ১৬-১৭ টাকা। লবণের দর বৃদ্ধিতেও চামড়া ব্যবসায় এক নতুন সংকট তৈরি করেছে। এছাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রমিকের মজুরি।

চামড়া ব্যবসায়ার সংকটের বিষয়টি নজরে আনলে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, চামড়ার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে। ইউএনও, পৌরসভার মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

গত ৯ আগস্ট চামড়ার দর ঘোষণা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এবারে ঢাকায় গরুর চামড়া ৪৫-৫০ টাকা ফুট এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা ফুট। খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা ফুট এবং বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকা ফুট।

গতবছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় সংগ্রহ করেন। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া ২০-২২ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ১৫-১৭ টাকায় সংগ্রহ করা হয়।

সারাবাংলা/এমএইচ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর