বিক্রি হচ্ছে না বড় গরু, চিন্তায় ব্যাপারিরা
২১ আগস্ট ২০১৮ ১৬:১০
।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘তিন দিন আগে ছয়টা গরু নিয়ে হাটে আইলাম ভাই। কিন্তু একটা গরুও বিক্রি হয়নি। সবগুলো বড় গরু। সময় আছে আজকের দিন, রাত পোহালেই তো ঈদ। কি করবো বুঝতেছি না। বিক্রি না হলে তো নিয়ে যেতে হবে। অন্তত একটা গরু বিক্রি করতে পারলে বাকিগুলো আনা নেয়ার খরচটা যোগাড় করতে পারতাম..!’
—বলছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থেকে তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল মাঠে পশু বিক্রি করতে আসা জামাত আলী ব্যাপারি। তিনদিন ধরে হাটে গরু নিয়ে ক্রেতাদের অপেক্ষায় থাকলেও কাঙ্ক্ষিত কোনো ক্রেতা পাননি তিনি। গরু বিক্রি না হওয়ার শঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়েছে তার।
তিনি সারাবাংলাকে আরও বলেন, ‘গরুগুলো হাটে আনার পর থেকে দু-একজন ক্রেতা দরদাম করলেও লাভ তো দূরের কথা চালান পর্যন্ত বলেনি। তাই বিক্রি করতে পারিনি। একেকটা গরু দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। অথচ একটা গরু সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলেছে একজন ক্রেতা। কিন্তু সেটা যদি ১ লাখ ৬০ হাজার বিক্রি না করি তাহলে লোকসান দিতে হবে।’
ক্রেতার এমন সংকটে গরুগুলো এখন সে হাট থেকে অন্য কোনো হাটে নেয়ার চিন্তা ভাবনাও করছেন তিনি। সেই সঙ্গে বেশি নয়, মোটামুটি লাভ হলেই বিক্রি করে দেবেন। দাম যাই হোক, সবগুলো গরু বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে চান বলে জানালেন তিনি।
এ অবস্থা শুধু জামাত আলী ব্যাপারির নয়, বড় গরুর চাহিদা না থাকায় রাজধানীর গাবতলী, শনির আখড়া, আফতাবনগর, তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল মাঠসহ বেশ কয়েকটি হাট ঘুরে একই তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে বড় গরু একেবারেই বিক্রি হচ্ছে না তাও কিন্তু নয়। সেক্ষেত্রে দু-একটা বিক্রি হলেও প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না বলে জানালেন ব্যাপারিরা। তাই সীমিত লাভ হলেই বিক্রি করে দিচ্ছেন বড় গরুগুলো। এক্ষেত্রে মাঝারি ও ছোট সাইজের গরুর চাহিদা থাকায় সেগুলোর দাম ছাড়ছে না ব্যাপারিরা।
ব্যাপারিরা জানান, গত বছর বড় গরুর চাহিদা ছিল অনেক বেশি। তাই এবারও বড় গরু হাটে এনেছিলেন তারা। কিন্তু এবার ক্রেতাদের চাহিদা ঠিক উল্টো। ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু কিনতে ভিড় ভাড়ছে ক্রেতাদের। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন বড় গরুর ব্যাপারিরা। টানা তিন থেকে চারদিন হাটে গরু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় থাকলেও কোনো কোনো ব্যাপারির একটা গরুও বিক্রি হয়নি।
গাবতলীর হাটে মাগুরার ব্যাপারি রইস মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল সকালে ৯টা গরু এনেছি, তিনটা বিক্রি করেছি। এখনও ৬টা আছে। যেগুলো বিক্রি করেছি সেগুলো সব মাঝারি সাইজের ছিল। বড়গুলোর একটাও বিক্রি হয়নি। দু-একজন ক্রেতা দরদাম করলেও কাঙ্ক্ষিত দর বলছে না।’
অপর এক বিক্রেতা যশোরের ব্যাপারী সিদ্দিক জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৮ তারিখে বড় সাইজের ১৩টা গরু নিয়ে হাটে এসেছি। এখন পর্যন্ত তিনটা গরু বিক্রি করেছি। তাও সীমিত লাভে। বাকিগুলো নিয়ে এখন চিন্তায় আছি। হয়তো বিকেল কিংবা সন্ধ্যার দিকে আরও দু-একটা বিক্রি হবে।’
সারাবাংলা/এসএইচ/এমও