প্রাথমিক সমাপনীতে পাস ৯৫.১৮%, ইবতেদায়ীতে ৯২.৯৪%
৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ১১:০৭
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : প্রাথমিক সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় এ বছর ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ শিক্ষার্থী। ইবতেদায়ীতে পাস করেছে ৯২.৯৪ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষার্থী।
শনিবার বেলা পৌনে ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এ ফলাফল তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী : এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তালিকাভুক্ত হয় ২৮ লাখ ৬ হাজার ৯৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ২১৬ জন শিক্ষার্থী। সকল বিষয়ে পাস করেছে ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৭১ শিক্ষার্থী। মোট পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র হলো ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ জন, ছাত্রী হলো ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪১ জন।
প্রাথমিক সমাপনীতে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ জন।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ছাত্রীরা ছাত্রদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ভালো করেছে। গড় পাসের দিক থেকে থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে আছে। ছাত্রদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ছাত্রীদের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪০ শতাংশ।
পাসের হার বিবেচনায় সেরা বিভাগ বরিশাল। এ বিভাগে পাস করেছে ৯৬ দশমিক ২২ শতাংশ শিক্ষার্থী। জেলার মধ্যে সেরা গোপালগঞ্জ। এ জেলায় পাসের হার ৯৯ দশমিক ৩৯ জন। পাসের হারে খারাপ করেছে সিলেট বিভাগ। এ বিভাগের পাসের হার ৯১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩৯৮৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৩ হাজার ৫৫৩ জন। পাসের হার ৮৯ দশমিক ১৮।
ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী : ইবতেদায়ী পরীক্ষায় তালিকাভুক্ত হয় সারাদেশের ১৩ হাজার ৩৫৫ মাদ্রাসার ২ লাখ ৯৪ হাজার ৩৮১ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৯৯ শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯২ দশমিক ৯৪।
ইবতেদায়ীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫০২৩ জন। গড় পাসের দিকে মেয়েরা এগিয়ে আছে। মাদ্রাসায় ছাত্রদের পাসের হার ৯২ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ছাত্রীদের পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ পাসের হার রাজশাহী বিভাগে ৯৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগের পাসের হার সর্বনিম্ন যা ৮৬.৯২ শতাংশ।
যা বললেন প্রধানমন্ত্রী : গণভবনে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা সমাপনী (জেএসসি)’র ফলাফলের অনুলিপি গ্রহণকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কচিকাঁচা শিক্ষার্থীদের ভেতরে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে, তারাই একদিন হবে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী।
এ সময়ে তিনি সরকারের উদ্যোগগুলোর কথা জানিয়ে বলেন, দেশে আজ স্বাক্ষরতার হার ৭২ শতাংশ। এটা পরিসংখ্যানে তবে প্রকৃত চিত্র আরও অনেক ভালো।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর দেশের প্রতিটি জেলায় নিরক্ষরমুক্ত করার উদ্যোগ নেন। সে উদ্যোগ ইউনেস্কো পুরস্কারও পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরে তা মুখ থুবড়ে পড়ে। শিক্ষার উন্নয়নে বিএনপি সরকার কোনও উদ্যোগই নেয়নি এমন মন্তব্য েকরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত বলতে গেলে বাংলাদেশ অন্ধকারের যুগেই ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। প্রতিটি বাবা-মা’ই তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন।
সমাপনী পরীক্ষার প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকলে যেন লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে সরকার সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। বৃত্তিপ্রদান এই উদ্যোগের একটি অংশ। জেএসসি-পিইসি এই দুটো পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধার মূল্যায়ন করা হয়। পরীক্ষা না নিলে বুঝব কী করে কার ভেতর কী মেধা রয়েছে।’
ফলাফল জানা যাবে মোবাইলে : এই পরীক্ষার ফলাফল মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও জানা যাবে। যে কোনো মোবাইল ফোন থেকে DPE লিখে স্পেস দিয়ে থানা/উপজেলার কোড নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ফিরতি এসএমএসে প্রাথমিক সমাপনীর ফল জানা যাবে।
আর ইবতেদায়ীর ফল পেতে EBT লিখে স্পেস দিয়ে থানা/উপজেলার কোড নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
এই এসএমএস লেখার সময় সরকারি অথবা রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের EMIS কোড নম্বরের প্রথম পাঁচ সংখ্যা উপজেলা/থানা কোড হিসেবে ব্যবহার করতে হবে; যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জানা যাবে।
এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dpe.gov.bd)এবং টেলিটকের ওয়েবসাইট (http://dpe.teletalk.com.bd) থেকেও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনীর ফল জানা যাবে।
সারাবাংলা/একে