সাধারণ ফেসবুক গ্রুপ, অসাধারণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
২২ আগস্ট ২০১৮ ২১:৩১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নানা কারণেই আমরা ফেসবুকে পড়ে থাকি। লাইক কমেন্ট দেওয়া আর ছবি আপলোড ছাড়াও যে গুরুত্বপূর্ণ কাজে সামাজিক এই যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করা যায় তার অনন্য নিদর্শন তৈরি করল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।
ঈদুল আজহার প্রথম দিনেই রাজধানী শহর থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করার আশ্বাস দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। এর জন্য ঈদের দিন থেকে শুরু হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম।
কীভাবে এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের মনিটরিং চলছে তা জানতে যাওয়া হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে। সেখানে দেখা গেল অভিনব ব্যবস্থা।
নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোর সম্মেলন কক্ষে তিনটা বিশাল স্ক্রিনে ভেসে আছে ফেসবুকের একটি গ্রুপ, ডিএসসিসি লাইভ মনিটরিং। ডিএসসিসির সমগ্র এলাকাকে তিনভাগে ভাগ করে তৈরি করা হয়েছে তিনটি টিম। তিনটি আলাদা ল্যাপটপে যুক্ত করা হয়েছে তিন স্ক্রিনের সঙ্গে। এখন ল্যাপটপের সামনে বসা সিটি কর্পোরেশন কর্মীরা মনিটর করছেন এই তিন এলাকাকে।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সিস্টেম অ্যানালিস্ট আবু তৈয়ব রোকন বলেন, আমরা ফেসবুকে ১৩২ জনকে নিয়ে একটি গ্রুপ করেছি। এই গ্রুপে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের যুক্ত করা হয়েছে। তাদের কাজ হচ্ছে নিজ নিজ এলাকার বিভিন্ন অংশে গিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে দেখানো যে তার এলাকা কতটা পরিছন্ন হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই ফেসবুক গ্রুপ হওয়ার আগে আমরা ফোন ব্যবহার করে পরিছন্নতা কর্মীদের কাছে জানতে চাইতাম তাদের কাজ কেমন চলছে। এতে আমরা সরজমিনে দেখতে পেতাম না আসলেই কতটা কাজ হয়েছে। এখন এই ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে আমরা পরিছন্নতা কার্যক্রমের সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি।
শুধু পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমই পর্যবেক্ষণই নয়, কোনো অংশে কোনো পরিছন্নতা কর্মীর কার্যক্রমে যদি সমস্যা হয় বা কোনো যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় যে বিষয়েও আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে এই ফেসবুক গ্রুপে।
আবু তৈয়ব জানান, তাদের এই ফেসবুক লাইভ চলবে রাত পর্যন্ত যতক্ষণ পুরো শহর পরিচ্ছন্ন হয়ে শেষ না হয়।
পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকরা তো নগর পরিষ্কারের কাজ করবেই এ ছাড়াও নাগরিকরা কোথাও আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের হট লাইন নাম্বার ০৯৬১১০০০৯৯৯ তে কল দিয়ে জানালে সেখানে পরিছন্নতাকর্মী পৌছে যাবে উল্লেখ করে আবু তৈয়ব জানান, আমরা শুধু পরিছন্নতা কর্মী পাঠাচ্ছি না, যিনি ফোন করছেন তার নাম্বারটা আমরা টুকে রাখছি, পরিছন্নতা কর্মী পাঠানোর পরে আমরা ফোন করে আবার জেনে নিচ্ছে স্থানটি পরিষ্কার হয়েছে কি-না। ফলে অপরিছন্ন থাকার কোনো অবকাশই আর থাকছে না।
তিনি আরও জানান, গত বছর কোরবানিতে চালু হওয়া এই হটলাইন নাম্বার গত বছর ২ হাজার ৪৯২টি কল আসে যার মধ্যে ১ হাজার ৬০৭টি ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের। ২৫৬টি কল আসে তাদের বাড়ির নিকটবরর্তী স্থানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পাঠানোর জন্য যার সবগুলোই পরিচ্ছন্ন করা হয়।
সারাবাংলা/এমএ/একে
https://www.youtube.com/watch?v=FzpniDyAB2c&feature=youtu.be