Tuesday 01 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা মেডিকেলের ‘অ্যাম্বুলেন্স সেবা’ শুধু সাইনবোর্ডেই


২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৮:৪০ | আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০১৮ ১৭:৩৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। সৈয়দ সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা:  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘অ্যাম্বুলেন্স সেবা’ দিতে জরুরি বিভাগের সাইনবোর্ডেই ঝুলানো আছে ফোন নাম্বার। কিন্তু রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, সরকারি এ সেবা পাওয়া তো দূরের কথা, সাইনবোর্ডে ঝুলানো টেলিফোন নাম্বারটি সব সময়ই বন্ধ থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যেখানে লেখা আছে ‘অ্যাম্বুলেন্স সেবা’। যোগাযোগ -৫৫১৬৫০৩১- ৪১। কিন্তু এই নম্বরে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলেও হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে এক রোগীর স্বজন আবুল কালাম জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনসাধারণের জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া সোনার হরিণ পাওয়ার মতই।

বিজ্ঞাপন

উত্তরা থেকে রোগী নিয়ে আসা কালাম জানান, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে অ্যাম্বুলেন্স খোঁজার সময় তিনি অ্যাম্বুলেন্সের সাইনবোর্ড দেখতে পান। পরে এখানকার টেলিফোন নাম্বর নিয়ে কয়েকবার ফোন দিলেও তা কেউ ধরেনি।

একই ধরনের অভিযোগ করেন মিরপুর থেকে রোগী নিয়ে আসা আলমগীর হোসেন। তিনি তার স্ত্রী রোখসানা বেগমকে কয়েক দিন আগেই ভর্তি করেন। দুদিন পর রোগীর ছুটি হলে জরুরি বিভাগে এসে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে থাকেন। না পেয়ে জরুরি বিভাগের পাশে থাকার জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সেবার চার্ট দেখে ফোন দেন। কিন্তু কোনো রেন্সপন্স পাননি। একবার ফোন রিসিভ হলেও ওপাশ থেকে কোনো কথা বোঝা যায়নি।

পরে বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিতে বাধ্য হন আবুল কালাম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বিপরীত পাশে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখার একটি নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাননি বলেও জানান কালাম।

বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সবুজ জানায়, অনেক দিন আগে এখানে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দেখতাম। এখন আর দেখি না।

এ নিয়ে কথা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) যানবাহন শাখার ইনচার্জ শাহ আলমের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমানে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স আছে। গত কয়েক মাস আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুইটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না থাকায় সেগুলো বের করা সম্ভব হচ্ছে না। একটি বিকল হয়ে আছে। বাকি চারটি সচল আছে।’

তবে চালক সংকট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি চালক ১২ জন ছিল। ৩ জন অবসরে গেলেও তাদের পদ এখনও শূন্য আছে। বর্তমানে আছে মোট ৯ জন, যারা তিন শিফটে কাজ করে।’

জরুরি বিভাগে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকার কথা থাকলেও সেখানে থাকে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ আলম বলেন, ‘চালক কম থাকায় অনেক সময় রাখা সম্ভব হয় না।’

তবে সারাবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকারি ৯ চালকের একজন পরিচালকের গাড়ি চালান। বাকিরা হলেন, তাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, নাজির হোসেন, ইউসুফ আলী, নান্নু মিয়া, স্বপন ও আব্দুল জলিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন স্টাফ জানান, চালক আ. জলিল, মোহাম্মদ আলী, ও নাজির হোসেনের অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবসা আছে। তারা সার্বক্ষণিক তাদের ব্যবসার কাজেই ব্যস্ত থাকে। এবং এরা সবাই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউর সঙ্গে জড়িত। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢামেক হাসপাতাল থেকে বাইরের আইসিইউতে রোগী পাঠানোর কাজ করে তা থেকে কমিশন পায় তারা।

হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অ্যাম্বুলেস রাখার জায়গায় অ্যাম্বুলেন্স নেই। কিন্তু একটি চার্টে নাম্বার তো দেওয়া হয়েছে।’

সাইনবোর্ডে থাকা নাম্বারে কল ঢোকে না বা রিসিভ হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একবার না ঢুকলে বারবার দিন। না হলে আপনারা পত্রিকায় লিখে দিন। হাসপাতাল আগে যা ছিল এখন তা নাই।’

সারাবাংলা/এসআর/জেডএফ

অ্যাম্বলেন্স সেবা ঢাকা মেডিকেল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর