মন্দিরে ঈদ জামাত মুসলিমদের, মসজিদে আশ্রয় হিন্দুদের
২৪ আগস্ট ২০১৮ ১২:৫৮
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
ভারতের কেরালায় ভয়াবহ বন্যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটায় আক্রান্ত এলাকার মানুষরা নিজ নিজ গ্রামের ফিরে যাচ্ছেন। সেই সাথে প্রকাশ পাচ্ছে বেশ কিছু অনন্য সাধারণ মানবিক গল্পের। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ঐক্যের সেসব উদাহরণ সাধারণ মানুষদের আপ্লুত করছে।
প্রথম ঘটনাটি ঈদের দিনের। কেরালার মালায় জেলায় পানিতে মসজিদ ডুবে গেলেও উঁচু এলাকায় মন্দিরে পানি প্রবেশ করেনি। তাই মন্দির কর্তৃপক্ষ স্থানীয় মুসলিমদের মন্দিরে ঈদের নামাজ আদায় করতে স্বাগত জানান। মুসলিমরা পুরাপ্পিল্লিকাভু রক্তেশ্বরী মন্দিরে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
মসজিদ মহল্লা কমিটির প্রধান খালিদ বলেন, মসজিদে পানি না নেমে যাওয়ায় আমরা মন্দির কমিটির সাথে কথা বলি। তারা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যায় ও আমাদের মন্দিরে নামাজ আদায় করতে বলে।
অপরদিকে, ঈদের খরচ কমিয়ে ভারতের মুসলিমরা কেরালার মানুষদের অর্থ সহায়তাও প্রদান করেছেন বলেও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এবার কেরালার দক্ষিণ মালাপুরামে আরও একটি ঘটনা প্রকাশ পেল। টাইমস অব ইন্ডিয়া খবরে বলা হয়, সেখানের জুমা মসজিদে আশ্রয় পেয়েছিল বন্যা দুর্গত ১৭টি হিন্দু পরিবার। শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও পুরুষসহ গৃহহীন পরিবারগুলো মসজিদে রাত্রিযাপন করেছেন, আহার সেরেছেন। এমনকি বাড়ি ফেরার সময় তাদেরকে দেওয়া হয়েছে গৃহস্থলি কাজের জরুরি কিছু মালামাল।
আশ্রয় দেওয়া চালাইয়ার গ্রামের পঞ্চায়েত ওসমান বলেন, মসজিদে অবস্থান করা মোট ৭৮ জনের অধিকাংশই ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। পরবর্তীতে তাদের সাহায্যের জন্য সেখানে রিলিফ ক্যাম্পও খোলা হয়।
হিন্দু-মুসলিম বিভেদ ভুলে পারস্পরিক এমন একাত্মতার উদাহরণ নিশ্চয়ই ভারতবাসী অনেকদিন মনে রাখবেন।
উল্লেখ্য, ভারতের কেরালা রাজ্যে গত একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় পাঁচশ’র বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ।
সারাবাংলা/এনএইচ
আরও পড়ুন,
কেরালার বন্যা পরিস্থিতি দেখে ৫০০ কোটির ত্রাণ ঘোষণা মোদীর