Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় রায় হবে ফরমায়েশি’


২৫ আগস্ট ২০১৮ ১৩:৩২

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ফরমায়েশি রায় হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার (২৫ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন।

এর আগে, শুক্রবার (২৪ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২১ আগস্ট বোমা হামলার রায় হলে সংকটে পড়বে বিএনপি।’ শনিবার (২৫ আগস্ট) আরেক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির প্রধান প্রধান নেতাদের দণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

এসব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, একুশে আগস্টের রায়কে প্রভাবিত করার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছেন। ওই মামলার রায় নিজেরা লিখে তা আদালতকে দিয়ে বাস্তবায়ন করাবেন কি না— মানুষের মনে সে সংশয়ও দেখা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, একটি ফরমায়েশি রায় হতে যাচ্ছে।’

‘ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেই পরিষ্কার, তারা নীলনকশা অনুযায়ী ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলার রায় নিয়ে আগাম কাজ করছেন এবং সেজন্য একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কূটচাল চালছেন তারা’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই দেখছি, আওয়ামী লীগ ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনীতি করছে। তাদের আন্দোলনের ফসল মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময়ও এ মামলার চার্জশিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের দলীয় লোক কাহার আকন্দকে তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ দেন।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘দলীয় চেতনার তদন্ত কর্মকর্তা কাহার আকন্দকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো। পরে ২০১১ সালে তারেক রহমানের নাম সম্পূরক চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হয়। পূর্বপরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চার্জশিটে  তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ জন্য নানা ধরনের ফন্দি-ফিকিরের আশ্রয় নেওয়া হয়।’

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা আরও বলেন, ‘২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় ১৬৪ ধারায় মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে তারেক রহমানের নাম ছিল না। কেবল এ মামলায় তারেক রহমানের নাম বলানোর জন্য অন্য মামলায় ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয় মুফতি হান্নানকে। পৃথিবীর কোনো দেশেই এ ধরনের নজির নেই। ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে মুফতি হান্নানকে দিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম বলতে ও স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে কাহার আকন্দ, যার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’

রিজভী বলেন, ‘২০০৮ সালের ১১ জুন বর্তমান আইজিপি ও তৎকালীন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি জাবেদ পাটোয়ারির তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায় হরকাতুল জিহাদ, মুফতি হান্নানই পরিকল্পনাকারী, মওলানা তাজউদ্দিন গ্রেনেড সরবরাহকারী, হামলার পরিকল্পনা হয় ১৯ আগস্ট। জাবেদ পাটোয়ারীর তদন্ত প্রতিবেদনে কোথাও তারেক রহমানের নেই।’

গ্রেনেড হামলা মামলায়র ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয় এবং জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, সেখানে নিম্ন আদালত কতটুকু স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে— সে প্রশ্ন সারাদেশের মানুষের।’

বিজ্ঞাপন

‘খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাননি। বিরোধী দলশূন্য আগামী নির্বাচন করতেই সরকার সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে। মানুষের ক্ষোভের ধাক্কায় আসন্ন পতনের ভয়ে সরকারের বুকে ধরফড়ানি শুরু হয়েছে বলেই উদ্ভট বক্তব্য রাখছে। সামনে হয়তো আরও নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করবে সরকার। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র ও মহাপরিকল্পনা করেন না কেন, আপনাদের পতন ঠেকানো যাবে না। আপনাদের পতনের ভূমিকম্প শুরু হয়েছে’— বলেন রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালকুদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহীনসহ অন্যরা।

 সারাবাংলা/এজেড/টিআর

রিজভী রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর