স্ত্রীকে ‘খুনের পর’ ঘরে তালা লাগিয়ে পালালেন কারারক্ষী
২৬ আগস্ট ২০১৮ ১১:৩৭
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
সিরাজগঞ্জ : জেলার শাহজাদপুর উপজেলার দারিয়াপুর মণ্ডলপাড়া গ্রামে যৌতুকের দাবিতে মিতু আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৬ আগস্ট) সকালে ওই গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মিতু আক্তার উল্লাহপাড়া চরশ্রিপলগাতি গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী মনিরুলের স্ত্রী।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খাজা গোলাম কিবরিয়া জানান, এ ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ বাড়ির সবাই পলাতক রয়েছেন। লাশ উদ্ধারের সময় তাদের ঘরে তালা লাগানো ছিল।
‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে’ বলে জানান ওসি।
প্রতিবেশীরা জানান, মিতুর শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে মাঝে মধ্যেই নির্যাতন করত। মনিরুল ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এলে যৌতুক নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় স্বামী মনিরুল মিতুকে পিটিয়ে হত্যা করে ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
মিতু আক্তারের বাবা গোলাম মোস্তফা জানান, আড়াই বছর আগে শাহজাদপুর দারিয়াপুর মণ্ডলপাড়া গ্রামের শওকত মণ্ডল ছেলে মনিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয় মিতুর। বিয়ের সময় ১০ ভরি স্বর্ণের গয়না দেওয়া হয় মিতুকে। এরপর বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবি করে আসছিল মিতুর শ্বশুর বাড়ির লোকজন। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা আনার জন্য মিতুকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্বামী মনিরুল বিয়ের পর থেকেই তার ওপর নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল। নির্যাতনে অতীষ্ঠ হয়ে বেশিরভাগ সময় মিতু বাবার বাড়িতে থাকত। ঈদের ছুটিতে মনিরুল বাড়িতে এলে শ্বশুর তাকে নিয়ে যায়।
শনিবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে মিতুকে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে।
মিতুর খালু মো. আব্দুর রশিদ জানান, শ্বশুর বাড়ির লোকজন মিতুকে নির্যাতন করত। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ের কথা গোপন রেখে মিতুর স্বামীকে পুলিশে চাকরি দেওয়া হয়। ছুটি নিয়ে মনিরুল যখনই বাড়িতে আসত মিতুর ওপর নির্যাতন চালাত।
সারাবাংলা/একে