Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৭ টাকা মজুরি বেড়েছে চা শ্রমিকদের


২৬ আগস্ট ২০১৮ ২২:৩৭

।। হৃদয় দেবনাথ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।। 

মৌলভীবাজার: অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে দৈনিক মজুরি ও বোনাস বাড়ানো হয়েছে দেশের অবহেলিত চা শিল্পের সঙ্গে নিয়োজিত অবহেলিত চা- শ্রমিকদের। বর্তমানে একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৮৫ টাকা থেকে ১৭ টাকা বাড়িয়ে ১০২ টাকা করা হয়েছে।

সোমবার (২৭ আগস্ট) থেকে এ চুক্তি কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।

গত ২০ আগস্ট ঢাকার মহাখালিতে চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী।

বর্তমানে চা শ্রমিকদের মধ্যে এ, বি ও সি ক্যাটাগরি বিদ্যমান। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের কোন ক্যাটাগরির মজুরি কত বেড়েছে তা জানতে চাইলে রাম ভজন কৈরী জানান, ‘আসলে এটা এগ্রিমেন্টের (এমওইউ)-এর পূর্বসমঝোতা। আপাতত স্বাভাবিকভাবে একজন চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ধরা হয়েছে ১০২ টাকা। এটা মূলত এ ক্লাস ক্যাটাগরির জন্য। অন্যান্য ক্যাটাগরির শ্রমিকের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। পরবর্তীতে এগ্রিমেন্টের মাধ্যমেই সবকিছুর ফাইনাল হয়ে আসবে।’

রামভজন কৈরী বলেন, ‘বর্তমানে একজন শ্রমিক ২ হাজার ৭২০ টাকা বোনাস পাচ্ছেন। এখন তা বেড়ে ৪ হাজার ৫৯০ টাকা হয়েছে।

এ ছাড়া মাসিক বেতনধারী একজন শ্রমিক ৩ হাজার ৬৫০ টাকা পেতেন। এখন তা থেকে বেড়ে ৫ হাজার ২০০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া এখন থেকে ক্যাজুয়াল বা অস্থায়ী ঠিকাদার শ্রমিকরা স্থায়ী বা মাসিক বেতনধারী শ্রমিকদের মজুরির সমান পাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সবশেষ ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর চা শ্রমিকদের মজুরি চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দৈনিক মজুরি ৬৯ টাকা থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ দৈনিক মজুরি ৮৫ টাকায় উন্নীত হয়। সম্পাদিত ওই চুক্তি মোতাবেক ২০১৫ সালে ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ২০০৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশীয় চা সংসদ (বিটিএ) এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে মালিক পক্ষ এককভাবে ৪৮ টাকা থেকে ৫২, ৬২ এবং সর্ব্বোচ্চ মজুরি ৬৯ টাকা নির্ধারণ করেন। উল্লিখিত মজুরির মেয়াদ ছিল ২০১১ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।

এদিকে বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে করা সর্বশেষ চুক্তির মেয়াদ ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়। কিন্তু মালিকপক্ষের টালবাহানায় চুক্তির মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার ২২ মাস পর নতুন এ চুক্তি সম্পাদিত হয়।

দেশের ২০টি উপজেলায় ২২৮টি বাগান ও ফাঁড়ি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায়ই ফাঁড়ি বাগানসহ মোট চা বাগান হচ্ছে ৯৩টি। এসব চা বাগানে কর্মরত নারী-পুরুষ চা শ্রমিকের সংখ্যা রয়েছেন ৯৮ হাজার ৭৫২ জন।

চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ। শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য একটি মাত্র সংগঠন; সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন।

শ্রমিকদের ভোটের মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তারা নির্বাচিত হন। প্রতি দুই বছর পরপর এই দুই সংগঠনের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরিসহ সুযোগ-সুবিধা নির্ধারিত হয়।

চলতি বছরের গত ২৪ জুন শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের লেবার হাউস নির্বাচনে মাখন লাল কর্মকার সভাপতি ও রামভজন কৈরী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন।

সারাবাংলা/এমআই

চা শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর