Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দলে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে: ওবায়দুল কাদের


২৭ আগস্ট ২০১৮ ১৪:৪৬

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মধ্যে হাইব্রিড বা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এ সম্পর্কিত একটি তালিকা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘সারা দেশ থেকে রিপোর্ট নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে একটি কমিটি তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। এই তালিকাটির যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম চলছে। ফলে আগামী নির্বাচনে দলের টিকেট অনুপ্রবেশকারীরা পাবে না। ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটিসহ অন্যান্য কমিটিতেও অনুপ্রবেশকারীদের স্থান হবে না।’

সোমবার (২৭ আগস্ট) সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। মন্ত্রী এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

‘বিএনপি নেত্রী কারাগার থেকে আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারাও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের আন্দোলন ঠেকাতে আপনাদের পরিকল্পনা কি’, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন সঠিক সময় সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিএনপি নির্বাচন বানচালের জন্য যতই অপকৌশল বা আন্দোলনের হুমকি দিক না কেন তা প্রতিহত করা হবে। আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নের জন্য, গণতন্ত্র রক্ষায় জনস্বার্থে সবসময় অপশক্তির বিরুদ্ধে রাজপথে থেকে আন্দোলন করেছে। আওয়ামী লীগ অতীতে রাজপথে ছিল, বর্তমানে দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য রাজপথে আছে, ভবিষ্যতেও রাজপথে থাকবে। ফলে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি আন্দোলনের জন্য যতই হুমকি দিক না কেন, কোন লাভ হবে না।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির আন্দোলন করার মতো সাংগঠনিক শক্তি নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘বিএনপির নেতারা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে এসির মধ্যে থেকে পুলিশের গতিবধি সর্ম্পকে ফোনের মাধ্যমে জানতে চেষ্টা করেন। নেতারা যদি মাঠে না নামে তা হলে কি কর্মীরা মাঠে থাকবে? কখনই থাকবে না। তবে তাদের নেতৃত্বে ছদ্মবেশে জামাত-জঙ্গি-সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো দিয়ে নাশকতামূলক গুপ্ত হামলামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে পারে। ওই সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠির ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিগুলো, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সজাগ দৃষ্টিতে রয়েছে। পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের বাইরে কেউ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চলালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর হস্তে তা দমন করবে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশি-বিদেশি উস্কানিতে একটি অপশক্তি নির্বাচন বানচাল ও দেশে অরাজকতা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ধরনের তথ্য প্রমাণ সরকারের হাতে রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য লক্ষ্য হচ্ছে ওয়ান-ইলেভেনের নীল-নকশা বাস্তবায়নের। এই অপশক্তি, ছদ্মবেশীরা হলো সুশীল সমাজের একাংশ। তারা ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমকে কেন্দ্র করে বিদেশিদের সাথে নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।’

মন্ত্রী এ সময় নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘গুজব ছড়ানো নোবেল জয়ী ওই বিদেশিদের সাথে আমাদের দেশের একজন নোবেলজয়ীও জড়িত রয়েছেন। তিনি ওখানে বসে আল জাজিরা টেলিভিশনের মাধ্য অনেক উস্কানিমূলক গুজব তথ্য ছড়াচ্ছেন। এই নোবেল বিজয়ী একসময় রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন।’

অভিযোগ উঠেছে সরকার বিএনপিকে মাইনাস করে নির্বাচন করতে চাচ্ছে। এজন্য সরকার সংলাপসহ বিএনপির কোনো দাবিই মেনে নিতে যাচ্ছে না সারাবাংলার এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা আমরা করবো কেন? বিএনপি একটি রেজিস্ট্রিকৃত রাজনৈতিক দল। তারা যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না চায় তা হলে নির্বাচন তো বসে থাকবে না। সংলাপ তাদের সঙ্গে কি করে হবে? ২০১৪ সালে সংলাপ নামের ট্রেনটি তারা মিস করেছে। সংলাপ নামের দরজাটি বন্ধ করে দিয়েছে। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে ডেকেছিল। তারা সাড়া দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী নিজে তাদের বাড়ির সামনে গিয়েছিল তারা দরজা খুলেনি। এখনতো সংলাপ করার সময় নেই।’

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশ ও জাতির কাছে আমরা সত্য ঘটনাগুলো তুলে ধরবো। দেশের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরা হবে। বিএনপির শাসন আমলের চিত্র আর আওয়ামী লীগের শাসন আমলের চিত্র দেখেই জনগণ তাদের মতামত দেবেন।’

আরও পড়ুন: ওয়ান-ইলেভেনের নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে: কাদের

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হলে দেশে সংকটের সৃষ্টি হবে বলে আপনি এর আগে একাধিকবার এ কথা বলেছেন। কি ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে বলে আপনি মনে করেন? এমন এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় তারা এড়াতে পারবে না। বিএনপি ওই সময় ক্ষমতায় ছিল। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতার উপর গ্রেনেড হামলা হতে পারে না।’ প্রকাশ্যে কর্তব্যরত পুলিশের চোখের সামনে সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড হামলা চালিয়ে পালিয়ে গেল। এরপর গ্রেনেড হামলার আলামত নষ্ট করে দিল। এফবিআই দিয়ে তদন্ত করাতে দিল না, বরং বিএনপি সরকার জজ মিয়া নাটক সাজালো। বিএনপি যদি এই হামলাল সঙ্গে জড়িত না থাকে তা হলে কেন তারা বিচারের পথ রুদ্ধ করতে এসব কার্যক্রম করলো। গ্রেনেড হামলার প্ল্যানার, মাস্টারমাইন্ড বিএনপি। আর কিলিং এজেন্ড যাদের নিয়োগ করেছে সেটিও তাদের।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির টার্গেট ছিল শেখ হাসিনাকে হত্য করার। ওইদিন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার জন্য গিয়ে ছিলেন। আর সেদিনই বিএনপি সরকারের নিয়োগকৃত কিলিং এজেন্ডরা তাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা করলো। এসবের দায় বিএনপির কোনো নেতা এড়তে পারে না।’

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতুর কার্যক্রম ৫৭ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। মেট্রোরেলের কার্যক্রম ২০২০ সালে সম্পন্ন হবে। আর সড়ক পরিবহন আইন আসন্ন অধিবেশনে পাস হবে।’

বিমসটেক সম্মেলন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘যাদের নিয়ে বিমসটেক গঠিত হয়েছে সেসব দেশের প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। আলোচনায় ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২৪ বলে ০ রানে জাকিরের লজ্জার রেকর্ড
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:১৮

সম্পর্কিত খবর