Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৃহত্তর ময়মনসিংহের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত


২৮ আগস্ট ২০১৮ ০৯:১১

।। মহিউদ্দিন সুমন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

টাঙ্গাইল: মাঠ থেকে বেশি দামে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে লোকসানে পড়েছেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। গ্রাম-গঞ্জ থেকে চামড়া কিনে এখন পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না তারা। শেষ পর্যন্ত চামড়া সংরক্ষণ করে ঢাকায় নিয়ে আদৌ লাভের মুখ দেখতে পারবেন কিনা— সেই শঙ্কা ঘিরে ধরেছে তাদের।

এলাকার প্রধান চামড়ার হাট টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়া বাজার ঘুরে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতি রোববার চামড়ার হাট বসছে। টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া বেচাকেনা করেন এই হাটে। হাটে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়। কোরবানির ঈদ মৌসুমে বেচাকেনা হয় দেড় থেকে দুইশ কোটি টাকার চামড়া। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ ট্রাক চামড়া হাটে কম উঠেছে। ওই চামড়া পাচার হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।

টাঙ্গাইল শহরে ১৫টি, কালিহাতী উপজেলার বল্লায় ১৪টি, এলেঙ্গায় ছয়টি চামড়ার আড়ত রয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কোরবানি ঈদে মাঠ থেকে কেনা কাঁচা চামড়ায় লবণ লাগিয়ে মজুত করেছেন সেসব আড়তে। এতে চামড়া প্রতি বাড়তি ১২৫ টাকা খরচ বেশি পড়েছে তাদের।

এলেঙ্গার চামড়া ব্যবসায়ী কবির হোসেন জানান, ‘৪শ পিস গরু ও সাড়ে ৫শ পিস ছাগলের চামড়া কিনে লবণ মেখে হাটে এনেছি। কিন্তু বড় কোনো পাইকার ক্রেতা দেখতেই আসেনি। বিক্রি না হলে আবারও লবণ মেখে রোদে শুকিয়ে  প্রক্রিয়াজাত করে মাস খানেক পর আড়তদারের কাছে বা ঢাকায় ট্যানারিতে বিক্রি করতে হবে।’ তাতে লাভের মুখ দেখতে পারবেন কিনা— তা নিয়ে সংশয় জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

পাকুটিয়া ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিহাবুল ইসলাম নেওয়াজ সারাবাংলাকে জানান, মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা কোরবানির মাঠ থেকে গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৮০ থেকে ১২০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪০ টাকা দরে কিনেছেন। এখন ঢাকার আড়তদাররা তাদের বেঁধে দেওয়া ৬৫ থেকে ৮০ টাকার ওপরে চামড়া না কেনায় মৌসুমি ও ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। তারা লোকসান দিয়ে না পারছেন চামড়া বিক্রি করতে, না পারছেন চামড়া সংরক্ষণ করতে।

ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে যারা দাদন নিয়ে বেশি দামে চামড়া কিনেছেন, তাদেরও এখন মহাবিপদ। কারণ ট্যানারি মালিকরা কেনা দামেও তাদের কাছ থেকে চামড়া কিনছেন না।

ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী শামছু মিয়া জানান, এবার তিনি ১২০টি গরুর চামড়া ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কিনে এ পর্যন্ত ৮৬ পিস বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকায়। বাকি চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না।

কুয়াশা লামিয়া এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. কামাল খান জানান, ট্যানারিদের কাছ থেকে যারা দাদন নিয়ে না বুঝে মাঠ থেকে বেশি দামে চামড়া কিনেছেন, তারা এ বছর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, হাটের ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ। হাটে চামড়া রাখার ভালো গুদাম ঘর নেই। তাদের আরও অভিযোগ, কোরবানি ঈদ মৌসুম এলেই স্থানীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন এক লাফে ট্রাকের ভাড়া দ্বিগুণ করে দেয়। তারা দেশের প্রাচীন এই হাটটির প্রতি স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারকে বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।

সারাবাংলা/এনএইচ/টিআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর