Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ইভিএম নিয়ে তোড়জোড় দূরভিসন্ধিমূলক’


২৯ আগস্ট ২০১৮ ১৩:৪৫

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।। 

ঢাকা: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তোড়জোড় দূরভিসন্ধিমূলক বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৯ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলাল উদ্দিন জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকিল্পনা রয়েছে ইসির।

ইসির এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে রিজভী বলেন, ‘সরকারি দল ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুধীজন ও পেশাজীবী সংগঠন আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার পক্ষে মত দিয়েছিল। ইসিও দীর্ঘদিন ধরে বলে এসেছে, সব পক্ষ না চাইলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না।’

‘কিন্তু বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগের কথা শুনা যাচ্ছে। ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের এই তোড়জোড় দূরভিসন্ধিমূলক ও হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমরা মনে করি’— বলেন রিজভিী।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কাজ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ইভিএম নামে এক বিতর্কিত মাধ্যম ব্যবহারের চিন্তা করছে— যা জনগণের ইচ্ছাবিরোধী। ভারতেও  দু’দিন আগে বিরোধী দলগুলো ইভিএম ব্যবহার না করতে সে দেশের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের দূরভিস্বন্ধিমূলক পরিকল্পনা মূলত ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করার জন্যই বলে আমরা মনে করি।’

বিজ্ঞাপন

‘ইভিএম নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন হতাশা ও সমালোচনার ঝড় বইছে, তখন এই ধরনের উদ্যোগ কার ইশারায় এবং কিসের ইঙ্গিত তা জাতির কাছে সুস্পষ্ট। জনগণের দল হিসেবে জনমতের প্রতি বিএনপির চিরন্তন দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই আমরা এমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করছি যেখানে জনগণের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ও দাবির প্রতিফলন ঘটবে’— বলেন রিজভী

ইভিএম নিয়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অভিজ্ঞতা ও আর্ন্তজাতিক গবেষণার ফলাফলের কিছু অংশ তুলে ধরেন বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

ভারতের ইকোনোমিক টাইমস পত্রিকার বরাত দিয়ে তিনি জানান, বিশ্বের ২০০ টি দেশের মধ্যে মাত্র ৪টি দেশে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। সেসব দেশেও ইভিএম ব্যবহার নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে। উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলো আজ পর্যন্ত ইভিএমের গ্রহণযোগ্য ব্যবহার হয়নি। যে সব অল্প সংখ্যক দেশে ইভিএম  আংশিকভাবে ব্যবহার করা হয়, সেখানেও ভোট প্রক্রিয়ায় ও ফল নির্ধারণের ভয়াবহ কারচুপির প্রমাণ মিলেছে।’

‘ভোট গ্রহণের এই পদ্ধতিতে ইন্টারনেট সিকিউরিটি ও তথ্যের গোপনীয়তা নিয়েও গণতান্ত্রিক বিশ্বে সার্বজনীন ভীতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই প্রায় সব দেশেই নির্বাচনে ইভিএমকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ ও জনবিরোধী মাধ্যম হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে’— দাবি রিজভীর।

আয়ারল্যান্ডে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে গবেষণার পেছনে ৫১ মিলিয়ন ইউরো খরচ করবার পর এটিকে ‘অবৈধ নির্বাচনী যন্ত্র’ হিসেবে ঘোষণা করা হয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘জার্মানির সুপ্রিমকোর্ট ইভিএমকে অসাংবিধানিক ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণার মাধ্যমে এর ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করে।

হল্যান্ডে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলের স্বচ্ছতার অভাবে ডাচ কাউন্সিল আইন করে ইভিএম ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। এছাড়াও ইটালি ও প্যারাগুয়েতে ইভিএম  নিষিদ্ধ করা হয়— জানান রিজভী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/জেডএফ

ইভিএম রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর