Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কয়লা চুরি বা দুর্নীতি হয়নি: খনির সাবেক এমডি


২৯ আগস্ট ২০১৮ ১৬:৩৫

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ‘কয়লা চুরি বা কোনো দুর্নীতি হয়নি’ বলে দাবি করেছেন খনির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদ। বুধবার (২৯ আগস্ট) দুদক কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি করেন।

এর আগে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা গায়েবের ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত পেট্রোবাংলার আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তাদের সবাই খনির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। দুর্নীতির এ ঘটনায় মামলার এজাহারে বলা হয়, খনির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ কয়লা চুরির এ ঘটনায় জড়িত৷

দুদকের তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাবিব উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘শুরু থেকেই টেকনিক্যাল লস হয়েছে। সেটাই আমরা প্রমাণ করার চেষ্টা করছি। এবং আসলে এখানে কোনো চুরি হয়নি। তদন্তে ইনশাআল্লাহ সেটাই একদিন প্রকাশ হবে যে এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি, চুরি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এটা টোটালি একটা টেকনিক্যাল লস। এটাই ইনশাল্লাহ তদন্তসাপেক্ষে দেশবাসী জানতে পারবে। সেই আস্থা আমার আছে। জিনিসটা উড়ে যায়নি।’

খনির সাবেক এই কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘২০০৫ সাল থেকে আমাদের যে কয়লা ছিল, এখানে আমাদের ১ দশমিক ৪ শতাংশ সিস্টেম লস হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে সর্বনিম্ন ২ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস গ্রহণযোগ্য।’ সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে সিস্টেম লস পরিমাপের সুযোগ ছিল না।’

বুধবার দুদকের মুখোমুখি হয়েছিলেন পেট্রোবাংলার কর্মকর্তা ও খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদ; কোম্পানির সেক্রেটারি আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও মোশারফ হোসেন সরকার; মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার; ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার; ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান; ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) জাহিদুল ইসলাম এবং উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১৩ আগস্ট পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ৩২ কর্মকর্তাকে তলব করে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। এর মধ্যে ১৬ আগস্ট সাত জন, ২৮ আগস্ট আট জন, ২৯ আগস্ট আট জন ও ৩০ আগস্ট বাকি ৯ জনকে পর্যায়ক্রমে দুদকে হাজির হতে বলা হয়।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পেট্রোবাংলার ১৫ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আরও ৯ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷

৩০ আগস্ট যাদের দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে তারা হলেন— উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) মো. খলিলুর রহমান; সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি ও গোপাল চন্দ্র সাহা; ব্যবস্থাপক (হিসাব) সারোয়ার হোসেন; ব্যবস্থাপক (সেলস ও রেভিনিউ কালেকশন) মো. কামরুল হাসান; উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও কাস্টমার সার্ভিসেস) মোহাম্মদ নোমান প্রধানীয়া; সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ কে এম সিরাজুল ইসলাম ও শরিফুল আলম এবং সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) আল আমিন।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির দুর্নীতি মামলায় দুদকের অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এসব কয়লার অনুমানিকক মূল্য ২৩০ কোটি টাকা।

এর আগে, কয়লা গায়েবের ঘটনা দুর্নীতির অনুসন্ধানে গত ২৩ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক শামছুল আলমকে প্রধান করে গঠিত এই তদন্ত কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন— সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক এ এস এম তাজুল ইসলাম। আর তদন্ত এই কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন দুদকের পরিচালক কাজী শফিক।

বিজ্ঞাপন

পরে কয়লা আত্মসাতের ঘটনায় গত ২৪ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে দুদক এই মামলার তদন্ত শুরু করে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর