গাবতলী থেকে সোনার বার বেনাপোলে পৌঁছে দেওয়া ছিল তাদের কাজ
২৯ আগস্ট ২০১৮ ১৯:৪১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: মোবাইল ফোনে আসত কাজের অর্ডার। রাজধানীর পুরান ঢাকায় জুতার ভেতরে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে দেওয়া হতো সোনার বার। সেই জুতা পায়ে দিয়ে যেতে হতো যশোর বেনাপোলে। ফোনেই জানিয়ে দেওয়া হতো জুতা কোথায় রাখতে হবে। এই কাজের জন্য যাতায়াত বাবদ তারা পেতেন ২ হাজার টাকা, পারিশ্রমিক আরো ৫ হাজার। প্রতি সপ্তাহে দুইবার কাজের অর্ডার আসত।
আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করার পর বুধবার (২৯ আগস্ট) বিকেল ৪টায় কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২ এর সিও (কমান্ডিং অফিসার) লে. কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
আনোয়ারুজ্জামান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে ঈগল পরিবহনের একটি বাস থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়। এরা হলেন, রেজাউল (৩৫), মো. ওলিয়ার (৫০), ওলিয়ার রহমান (৩০), ওহিদুল ইসলাম (৩৪) ও মো. বিল্লাল হোসেন (৩৫)। এ সময় তাদের জুতার ভেতরে কৌশলে লুকিয়ে রাখা ৯৬টি সোনার বার জব্দ করা হয়। চারজনের জুতার ভেতর থেকে ৮০টি এবং একজনের জুতার ভেতর থেকে ১৬টি বার জব্দ করা হয়। প্রত্যেকটি বারের ওজন ১১৬ গ্রাম। সেই অনুযায়ী মোট সোনার বারের ওজন ১১ কেজি ১৩৬ গ্রাম। যার দাম প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
বিল্লাল এবং ওলিয়ার রহমানের দুলাভাই। বিল্লালের বাড়ি ঝিকরগাছায়। আর ওলিয়ার রহমানসহ বাকি চারজনের বাড়ি বেনাপোল এলাকায়। ওলিয়ার রহমান ২ বছর ধরে এই পেশায়। বিল্লালসহ বাকিরা চার মাস ধরে স্বর্ণ পাচার করে আসছিল।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সোনার বারগুলো ঢাকা থেকে যশোর পৌঁছে দেওয়াই তাদের কাজ ছিল। মূল হোতারা কখনোই তাদের সামনে আসত না। বেলাপোল বর্ডার পার হয়ে সেগুলো যেতে ভারতে। সোনার বারগুলোর গায়ে ইউএই, আল ইতিহাদ দু্বাই ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাম লেখা রয়েছে। বারগুলো আটক করার পর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রত্যেকটি স্বর্ণের বার ২৪ ক্যারেটের। যেহেতু প্রতি মাসে ৮ বার তারা স্বর্ণ পাচার করে আসছিল তাই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করবে র্যাব। আমাদের লক্ষ্য থাকবে স্বর্ণ পাচার যেন পুরোপুরি রোধ করা যায়। একইসঙ্গে এই চক্রে আর কারা জড়িত এবং মূল হোতা কারা তাও বের করার চেষ্টা করবে র্যাব।
এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, অভিযান চলছে। এই চক্রের সঙ্গে পুরান ঢাকার ও বিমান বন্দরের কেউ জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এটি