র্যাবের অভিযানে মাদকসেবীর মিনতি: বাপের জনমেও আর আমু না
২৯ আগস্ট ২০১৮ ১৯:৩৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘স্যার, আমার ছেলে আছে, মেয়ে আছে, স্ত্রী আছে। আমারে ছাইড়া দেন। আমার বাপের জনমেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আর আমু না। আমাকে শাস্তি দিয়েন না। আমি এসব খাওয়া ছেড়ে দিবো। আর কোনোদিন এসব খামু না।’
বুধবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে র্যাবের হাতে আটক হওয়া ১০৩ জনের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের কাছে এভাবেই মিনতি করছিলেন।
পরে সাংবাদিকদের র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, গত তিন দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে র্যাব-৩-এর বেশ কয়েকটি দল গোয়েন্দা নজরদারি করেছে। আজ এক অভিযানে দুই নারীসহ ১০৩ জন মাদকসেবী ও সরবরাহকারীকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ১০৩ জনের মধ্যে দুই নারীসহ ১৪ জন মাদক সরবরাহকারী। আর বাকিরা সবাই মাদকসেবী। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাদক সেবনের জন্য কিছুটা নিরাপদ মনে করে তারা এখানে প্রায়ই আসে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান। এখানে কাউকে মাদক সেবন করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, আগেও এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। মাদকসেবীদের হাতে নারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। ল্যাপটপ ছিনতাইয়ের ঘটনা কিংবা আটকে রেখে এটিএম বুথে নিয়ে গিয়ে টাকা তোলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। অনেক ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে এখানে। পাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাদকের অভয়ারণ্য হলে শিক্ষার্থীদেরও এতে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এখানে আগামীতেও নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।
র্যাবের হাতে আটক দুই নারীর মধ্যে একজন পারুল। গত পরশু (২৭ আগস্ট) তিনি মাদকের একটি মামলায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন জানিয়ে সারওয়ার আলম আরও বলেন, ‘বের হয়েই তিনি আবারও মাদক সরবরাহের কাজ শুরু করেছেন। আর মাদকসেবীদের কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ কলেজশিক্ষার্থী, আবার কেউ কেউ পেশাজীবীও রয়েছেন।’
অভিযানে আটক ১০৩ জনের প্রত্যেকেরই বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর মধ্যে কারও দুই মাস, কারও ছয় মাস, কারও একবছর, কারও কারও দুই বছর মেয়াদেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সারওয়ার আলম বলেন, ‘কে কোন পেশার, তা আইন দেখবে না। সবাই জানে, গত মে মাস থেকে র্যাব মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই যুদ্ধে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না— এটিই শেষ কথা।’
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর