যক্ষ্মা রোগী প্রতি লাখে ২৬০ জন, নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ২২১ জন
২৯ আগস্ট ২০১৮ ২২:৩৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দেশে প্রতি লাখে ২৬০ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগী রয়েছেন আর নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ২২১ জন। নারীর তুলনায় পুরুষদের মধ্যে এবং গ্রামের তুলনায় শহরে যক্ষ্মায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। প্রতি লাখে ৪৫২ জন পুরুষ এবং ১৪৩ জন নারী এই রোগে আক্রান্ত। দেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠী, পুরুষ এবং শহর এলাকায় যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
আজ বুধবার (২৯ আগস্ট) প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস প্রিভিলেন্স সার্ভে রিপোর্ট ইন বাংলাদেশ’-এ এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, নাটাব-এর সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউএসএইড-এর প্রতিনিধি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনটিপির লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম। জরিপের তথ্য উপস্থাপন করেন এর মূখ্য গবেষক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান।
জরিপে আরও পাওয়া গেছে, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে যাদের বয়স তাদের যক্ষ্মায় আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি। জরিপে দেখা গেছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ৯৫৪ জন, ৫৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৪৬২ এবং ৪৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি লাখে ৩৩৮ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়; ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশের শহর ও গ্রাম এলাকায় এই জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপের জন্য নির্ধারিত এক লাখ মানুষকে নমুনা হিসেবে নির্বাচন করা হলেও ৯৮ হাজার ৭১০ জনের উপর জরিপ চালানো হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীর হার ছিলো ৯১ শতাংশ।
জরিপ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা রোগকে ৯০ ভাগ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কাজ করে যক্ষ্মা নির্মূল করব। এই রোগ নির্ণয়ের জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন সারাদেশের সকল হাসপাতালে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে মাত্র ১০ ভাগ রোগী চিকিৎসা নেয়। প্রাইভেট সেক্টরে চিকিৎসা নেয় ৫১ ভাগ রোগী। যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা আরও বাড়ানো উচিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখে ৪শ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। কিন্তু আমাদের সার্ভেতে দেখা যাচ্ছে, ৪শ থেকে ২০৬ জনে নেমে এসেছে অর্থাৎ বাংলাদেশে যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব কমেছে।
সারাবাংলা/জেএ/এমআই